নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শিক্ষার পরিবেশ ও গবেষণাধর্মী কার্যক্রমের পাশাপাশি এবার নজর কেড়েছে সূর্যমুখীর এক মনোমুগ্ধকর চাষাবাদ দিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দক্ষিণ পাশে ও অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনের বিস্তৃত এলাকায় হাজার হাজার সূর্যমুখী ফুলের শোভা যেন রঙিন করে তুলেছে পুরো ক্যাম্পাসকে।
প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল মাসে প্রকৃতির এমন সৌন্দর্যের বিস্ফোরণ যেন নোবিপ্রবির ক্যালেন্ডারের বিশেষ এক অধ্যায় হয়ে উঠেছে। হলুদ ফুলের মাঝে সবুজ পাতার কোমল ছোঁয়া মিলে তৈরি হয়েছে এক অপূর্ব ক্যানভাস, যা মুগ্ধ করেছে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে দর্শনার্থী সকলকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ব্যক্তিগত আগ্রহ ও সৌন্দর্যবর্ধন কমিটির আন্তরিক তত্ত্বাবধানে এ বছর বপন করা হয় সূর্যমুখীর বীজ। এখন সেই বীজের ফলাফল প্রকৃতির এক বিস্ময়কর প্রতিচ্ছবি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে নোবিপ্রবির হৃদয়ে।
শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, ক্যাম্পাসের বাইরের দর্শনার্থীরাও ভিড় জমাচ্ছেন এই অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করতে। শিশুদের হাতে ফুল, বড়দের চোখে প্রশান্তির ঝিলিক—এই চিত্র যেন হয়ে উঠেছে এক অভিজ্ঞতার নাম। দর্শনার্থী রেজুয়ানা সুলতানা বলেন, “এত সূর্যমুখী একসঙ্গে আগে কখনো দেখিনি। চোখে-মনে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়।”
প্রসঙ্গত, হেলিয়ানথাস নামের এই বর্ষজীবী তেলজাতীয় ফসলটি ১৯৭৫ সাল থেকে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। কিরণী (ডিএস-১), বারি সূর্যমুখী-২, হাইসান-৩৩ প্রভৃতি জাতগুলো বর্তমানে চাষে জনপ্রিয়। শুধু সৌন্দর্য নয়, সূর্যমুখী পরিবেশবান্ধবও বটে—এটি মাটিক উর্বর করে, জ্বালানি দেয়, এমনকি মানুষের আশা ও স্বপ্নও বোনে।
এই সূর্যমুখী ফুলগুলো এখন আর শুধু একটি প্রাকৃতিক উপাদান নয়, বরং নোবিপ্রবির প্রাণপ্রবাহের প্রতীক। এমন এক অনন্য চিত্রকল্প যেখানে প্রকৃতি, জ্ঞান ও আবেগ একসাথে জড়িয়ে আছে। হয়তো একদিন কোনো আগন্তুক এসে দাঁড়াবে এই হলুদ-সবুজ রাজ্যে এবং তাকেও ছুঁয়ে যাবে সূর্যমুখীর অপরূপ সৌন্দর্য।