ডা. জুবাইদা রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী, প্রায় ১৭ বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। তার এই প্রত্যাবর্তনের পর তিনি তার পূর্বের সরকারি চাকরিতে পুনর্বহাল হতে যাচ্ছেন। সব প্রক্রিয়া শেষে দু-একদিনের মধ্যে আদেশ জারি করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পেশাগত জীবন ও বরখাস্তের পটভূমি
ডা. জুবাইদা রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করে ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করে সরকারি চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটি নিয়ে লন্ডনে যাওয়ার পর ২০১৩ সালে দেশে ফিরে নিজ কর্মস্থলে যোগদান না করায় বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস অনুযায়ী তার চাকরির অবসান হয়। পরে তিনি ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন থেকে মেডিসিনে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবনের সূচনা
ডা. জোবাইদা রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে সরকারি স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেন। একজন মেধাবী চিকিৎসক হিসেবে তার কর্মজীবনের শুরু ছিল আশাব্যঞ্জক। কিন্তু ২০০৮ সালে তিনি শিক্ষা ছুটিতে যুক্তরাজ্যে যান।
সরকারি চাকরিতে পুনর্বহাল
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ডা. জোবাইদা রহমানকে তার পূর্বের সরকারি চিকিৎসকের পদে পুনর্বহাল করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দীর্ঘদিন পর সরকারি চাকরিতে ফেরার বিষয়টি একদিকে যেমন প্রশাসনিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ, অন্যদিকে এটি রাজনৈতিক দিক থেকেও ইঙ্গিতপূর্ণ — বিশেষ করে তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সক্রিয়তা নিয়ে।
দেশত্যাগ ও রাজনৈতিক প্রভাব
তার স্বামী তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা এবং ১/১১ পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নানা রাজনৈতিক চাপে ও মামলার জটিলতায় তিনি আর দেশে ফিরতে পারেননি।
দেশে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বহালের প্রক্রিয়া
২০২৫ সালের ৬ মে, ডা. জুবাইদা রহমান তার শাশুড়ি ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফেরেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানাতে হাজারো বিএনপি সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।ফেরার পরপরই তিনি তার অসুস্থ মাকে দেখতে স্কয়ার হাসপাতালে যান ।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ
ডা. জুবাইদা রহমানের দেশে ফেরা ও সরকারি চাকরিতে পুনর্বহাল একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইঙ্গিত বহন করে। এটি বিএনপির নেতৃত্বে পরিবর্তনের সম্ভাবনা এবং তার রাজনৈতিক সক্রিয়তার ইঙ্গিত দিতে পারে। তবে, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার অবস্থা এবং আইনি প্রক্রিয়া কীভাবে অগ্রসর হয়, তা ভবিষ্যতে তার রাজনৈতিক ভূমিকা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হবে। এই ঘটনাটি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনা ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।
বাসস্থান ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
দেশে ফিরে ডা. জোবাইদা রহমান তার বাবার ধানমন্ডির ৫ নম্বর রোডের মাহবুব ভবনে থাকবেন। এই বাসভবনে ইতোমধ্যেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে তার প্রত্যাবর্তনকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।