ঈদুল ফিতরের ছুটিতে আবাসিক হল খোলা রাখার দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কিছু শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে তারা এই কর্মসূচি শুরু করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রশাসনের কেউ সাক্ষাৎ করতে না আসায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। দেড়টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান এসে জোর করে তালা খুলে ফেলেন। এসময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রক্টর এবং রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের উচ্চবাচ্য হয়। এই ঘটনার ভিডিও করার সময় সাংবাদিককে ভিডিও করতে বাঁধা দিয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘এই তুমি ক্যামেরা বন্ধ কর’।
বিকেল সাড়ে ৪টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারী ১০-১২ জন শিক্ষার্থী প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান করছেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক এবং সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলিফ বলেন, আমাদের দাবি হলো ইদে হল খোলা রাখা। প্রশাসন যদি এ দাবি না মানে তাহলে আমরা এখানে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়নি। প্রশাসন নাকি শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে খুবই চিন্তিত; আমরাতো চাই হল খোলা রেখে আমাদের সমস্যার সমাধান করা হোক। কিন্তু তা না করে নোটিশ দিয়ে জোর করে বের করে দিতে চাচ্ছে।
নবাব আব্দুল লতিফ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন বলেন, ৯ তারিখ আমার ফাইনাল পরীক্ষা আছে। বাড়িতে গেলো পড়াশোনায় সমস্যা হতে পারে, এজন্য বাড়িতে যাচ্ছি না। আমার মতো অনেকের পরীক্ষা রয়েছে। এছাড়া অনেকে আর্থিক কিংবা পারিবারিক সমস্যার কারণে বাড়িতে যেতে পারছে না। এমনও শিক্ষার্থী রয়েছে যাদের বাসায় থাকার জায়গা নেই। এজন্যই আবাসিক হল খোলা রাখা একান্ত প্রয়োজন।
এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. বায়তুল মোকাদ্দেছুর রহমান বলেন, ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের আমি বলতে চাই, তারা যেন প্রাধ্যক্ষ পরিষদের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানায়। তাদের অনুভূতি আমরা বুঝি। পরবর্তীতে আবাসিক হল বন্ধ রাখা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার ক্ষেত্রে কীভাবে শিক্ষার্থীদের পার্টিসিপেশন নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়ে আমাদের চেষ্টা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে সব হল সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। হলের ভিতরে কোনো শিক্ষার্থী নেই। শুধু প্রশাসন ভবনের সামনে ৬-৭ জন আন্দোলন করছে। আমরা এখন পর্যন্ত আগের সিদ্ধান্তেই রয়েছি।
প্রক্টর কর্তৃক সাংবাদিককে ভিডিও করতে বাঁধা দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১২টার মধ্যে আবাসিক হলে অবস্থানরত সব শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিল প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। ২৮ মার্চ থেকে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত হল বন্ধ থাকবে এবং ৪ এপ্রিল সকাল ১০টায় আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে।