বিপিএলের ১১তম আসর যেন নাটকের মঞ্চ। সেই মঞ্চে নায়কের ভূমিকা পালন করছে রাজশাহীর মালিক পক্ষ। এবারের বিপিএলে এমন কোন নাটক নেই যেটা তারা করে নি। তবে বাকি ছিল তাসকিন-এনামুলদের হোটেল থেকে বের করে দেয়া এবার সেই কলাও পূর্ণ করলো দলটি।
আজ(২৯ জানুয়ারি) খেলোয়ারদের জন্য নির্দেশ আসে যাদের বাসা ঢাকা তারা যেন নিজ বাসায় অবস্থান করে। এই খবরে যখন সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে তখন রাজশাহীর পক্ষ থেকে দেয়া হলো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি সেখানে রাজশাহী জানিয়েছে, ‘কিছু ক্রিকেটারের অনুরোধের পরে, দুর্বার রাজশাহী ম্যানেজমেন্ট তাদের তিন দিনের বিরতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনুরোধটি মূলত ঢাকায় বসবাসকারী খেলোয়াড়রা করেছেন। তবে যারা ঢাকার বাইরে থাকেন, বিদেশি ক্রিকেটার এবং কোচিং স্টাফরা দলের সাথে ঢাকার টিম হোটেলে থাকবেন। ঢাকায় বাসা রয়েছে এমন খেলোয়াড়রা যে কোনও দিন টিম হোটেলে চেক ইন করতে পারবেন।’
রাজশাহী আরও জানিয়েছে, ‘রাজশাহী ইতিমধ্যে ১২টি ম্যাচ থেকে ৬টি জয় নিয়ে চলমান বিপিএল টি -টোয়েন্টিতে তাদের লিগ পর্বের ক্যাম্পেইন শেষ করেছে এবং বর্তমানে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে রয়েছে। প্লে-অফে রাজশাহীর খেলার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে তাই ম্যানেজমেন্ট বাকি দলের লিগ পর্বের ম্যাচ শেষ হওয়ার অপেক্ষা করছে।’
এদিকে প্লে-অফের লড়াইয়ে এখনও টিকে আছে রাজশাহী। ১২ ম্যচে সমান ১২ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছেন টেবিলের ৩ নাম্বার। যদিও ১২ ম্যাচ শেষ করা একমাত্র দল রাজশাহী । তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে চিটাগাং ও খুলনার হার-জিতের দিকে। তবুও প্লে অফের আশা এখনো বেঁচে আছে রাজশাহীর।
এর আগে থেকেই রাজশাহীর ক্রিকেটারদের আবাসন ও যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ খরচ না করার অভিযোগ ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটির বিরুদ্ধে। এমনকি ঢাকায় একবার হোটেল পরিবর্তন করার মতো ঘটনা ঘটেছে ক্রিকেটারদের সাথে। ধারণা করা হচ্ছে ক্রিকেটারদের থাকা-খাওয়ার খরচ বহন করা যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে এসেছে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের জন্য। তাই খরচ বাঁচাতেই ক্রিকেটারদের ঢাকার বাসায় অবস্থান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
সবচেয়ে বেশি বির্তক হয়েছে খেলোয়ারদের পারিশ্রমি ইস্যুতে যা নিয়ে তালবাহানা করে আসছে বিপিএলের শুরু থেকে ই। যার জন্য প্রথমে দেশি ক্রিকেটারদের নেতৃত্বে অনুশীলন বয়কট করে খেলোয়াররা। এরপরও পারিশ্রমিক সমস্যার সমাধান করেনি দলটি। যার ফলে বিপিএলের ইতিহাসে লজ্জার রেকর্ড করে রাজশাহী ,কোন বিদেশী ক্রিকেটার ছাড়া ই মাঠে নামতে হয়েছে দলটিকে। কারণ বিদেশী ক্রিকেটাররা জানিয়ে দিয়েছিল পারিশ্রমিক ছাড়া তারা মাঠে নামবে না।
তখন দেশি ক্রিকেটারদের পারিশ্রকের টাকা চেকের মাধ্যমে দেয়া হয়েছিল। সেদিন ম্যাচ শেষে তাসকিস মজার ছলে বলেছি “মিরপুরের উইকেটের মতো যদি চেক আবারো বাউন্স করে তাহলে সমস্যায় পরবে ক্রিকেটাররা”। তবে তাসকিনের সেই শঙ্কা ই সত্যি হলো আবারও চেক বাউন্স করলো রাজশাহীর। তবে ২ তারিখের মধ্যে টাকা অ্যাকাউন্টে ডুকলে ক্রিকেটাররা টাকা তুলতে পারবে। এই টাকা নিয়ে বিদেশী ক্রিকেটার ডেবিড মালান মন্তব্য করেছেন “ টাকা না থাকলে দল নেন কেন?”
ফলে রাজশাহীর মালিক পক্ষের এমন আচরণ করা ও তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে বিসিবির ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দেশি-বিদেশী গণমাধ্যমে।