চার বছর আগে রাজধানীর বনশ্রীতে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় গৃহশিক্ষক জাহিদুল ইসলামকে (৩০) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোছাম্মৎ রোকশানা বেগম হেপীর আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জাহিদুল ইসলাম বরগুনা জেলা সদরের পরীখাল গ্রামের মো. ফজলুল হকের ছেলে।
এদিন রায় ঘোষণার সময় আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তার উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আবারও তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সাজ্জাদ হোসেন (সবুজ) গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ধর্ষকের কোনো ছাড় নেই। ধর্ষকদের আরও কঠিন সাজা হওয়া উচিত, যেন কেউ আর ধর্ষণ করার সাহসও না পায়। আমরা আজকের এ রায়ে সন্তুষ্ট।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ইমরান হোসেন বলেন, এ রায়ে আমরা কেউই সন্তুষ্ট নই। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো। আশা করি উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার হবে এবং আসামি খালাস পাবেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৩ মার্চ ভুক্তভোগী শিশুটির বাসায় পড়াতে আসেন গৃহশিক্ষক জাহিদুল ইসলাম। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভুক্তভোগী শিশুর বাবা-মা বাসা সংলগ্ন গ্যারেজে কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ জাহিদুলকে তড়িঘড়ি করে বের হয়ে যেতে দেখেন তারা। পরে শিশুটির কান্নার আওয়াজ শুনে তারা ঘরে যান। এরপর শিশুটি ধর্ষণের কথা তাদের জানায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর বাবা খিলগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০২১ সালের ২৪ জুলাই মামলাটি তদন্ত করেন উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পুলিশ পরিদর্শক মোসা. রাশিদা জাহান রুনা তালুকদার। জাহিদুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন তিনি।
২০২১ সালের ২৪ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পুলিশ পরিদর্শক মোসা. রাশিদা জাহান রুনা তালুকদার তদন্ত করে আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। পরের বছরের ২০ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন।
