রক্ত দিয়ে ২৪ লাখ শিশুর জীবন বাঁচানো ব্যক্তির মৃত্যু

158850fb5944a4641c88fdb518438540.jpg
মো: আল মামুন

রক্ত দিয়ে আমরা অনেকেই মানুষকে সহায়তা করে থাকি।কেউ কেউ এক বার বা দু’বার রক্ত দিয়ে আর দেন না। কিন্তু গত ৬০ বছর ধরে প্রায় প্রতি সপ্তাহে রক্ত দিয়ে চলেছেন জেমস হ্যারিসন। তার দেওয়া রক্তের জন্যই জীবন বেঁচেছে ২৪ লাখেরও বেশি অস্ট্রেলিয় শিশু।

এ কাজ করে তিনি এখন সবার কাছে পরিচিত ‘ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন আর্ম’ নামে।

রক্তদাতাদের মধ্যে গোটা বিশ্বে অন্যতম ছিলেন তিনি। যার প্লাজমা ২০ লাখের বেশি শিশুর জীবন বাঁচিয়েছে। জেমস হ্যারিসন নামের সেই অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি নার্সিং হোমে ঘুমন্ত অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে তার পরিবার। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এতে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়াতে হ্যারিসনের উপাধি ছিল গোল্ডেন আর্ম বা সোনালী বাহু। তার রক্ত কণিকায় অ্যান্টিবডি, অ্যান্টি ডি ছিল যা গর্ভবতী মায়েদের ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। যেসকল নারীদের রক্তকণিকা তাদের শিশুর জন্য বিপজ্জনক তাদের জন্য ওই অ্যান্টি ডি ছিল বেশ কার্যকর। তার মৃত্যুতে গভীর শ্রদ্ধা ও শোক জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার রেড ক্রস ব্লাড সার্ভিস।

হ্যারিসন নামের ওই ব্যক্তির রক্ত আর সাধরণ কয়েক জনের মতো নয়। বিশেষ কিছু অ্যান্টিবডির উপস্থিতিই তার রক্তকে করেছে বিশেষ। তার রক্তে থাকা রোগ প্রতিরোধকারী অ্যান্টিবডি দিয়ে তৈরি হয় ‘অ্যান্টি-ডি’ নামের এক ধরনের ইনজেকশন।

১৮ বছর বয়স থেকে রক্তের প্লাজমা দান করতে শুরু করেন তিনি। ৮১ বছর পর্যন্ত প্রতি দুই সপ্তাহে রক্ত দিতে হ্যারিসন। ২০০৫ সালে তিনি সর্বাধিক রক্তের প্লাজমা দান করার বিশ্ব রেকর্ডটি অর্জন করেছিলেন। ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি এই খেতাবটি ধরে রেখেছিলেন। পরে সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের একজন পুরুষ তাকে ছাড়িয়ে যান।

হ্যারিসন কোনোরকম যন্ত্রণা ছাড়াই এত জীবন বাঁচাতে পেরে খুব গর্বিত বলে জানিয়েছেন তার মেয়ে ট্রেসি মেলোশিপ।

অ্যান্টি-ডি গর্ভস্থ শিশুদের ভ্রুণ এবং নবজাতকের হেমোলাইটিক রোগ বা এইচডিএফএন নামক একটি মারাত্মক রক্তের ব্যাধি থেকে রক্ষা করে। শিশু মায়ের গর্ভে থাকাকালীন ওই অবস্থা দেখা দেয়, কেননা তখন মায়ের লোহিত রক্তকণিকা তার ক্রমবর্ধমান শিশুর রক্তকণিকার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না।

Leave a Reply

scroll to top