মঙ্গল শোভাযাত্রায় ‘থাকছে না’ আবু সাঈদের প্রতিকী ভাষ্কর্য

New-Project-1-11.jpg

মঙ্গল শোভাযাত্রায় ‘থাকছে না’ আবু সাঈদের প্রতিকী ভাষ্কর্য

ঢাবি প্রতিনিধি

বাঙালির সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের ২০ ফুট লম্বা প্রতিকী ভাষ্কর্য রাখার ‘প্রাথমিক সিদ্ধান্ত’ থেকে সরে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম শেখ এ তথ্য জানান।

অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম বলেন, “এটি নিয়ে প্রাথমিকভাবে চিন্তা করা হয়েছিল। চূড়ান্ত কিছু ছিল না সেটা। তবে এখন যেহেতু আবু সাইদের পরিবার বিষয়টি চাচ্ছে না তাই সেটি করার আর প্রশ্নই আসে না। মঙ্গল শোভাযাত্রায় এটি থাকবে না।”

 

সোমবার নববর্ষ উদ্‌যাপনের কর্মসূচি প্রণয়ন সংক্রান্ত এক সভা শেষে চারুকলা অনুষদের ডিন আজাহারুল ইসলাম জানান, এবার প্রাথমিকভাবে বড় আকারের চারটি ভাস্কর্য রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে থাকবে ২০ ফুট দীর্ঘ জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাঈদের ভাস্কর্য। আরও থাকবে একটি করে বাঘ, পাখি ও স্বৈরাচারের প্রতীকী ভাস্কর্য। আর অনেক মুখোশ থাকবে।

এরপর আবু সাইদের দুই হাত প্রসারিত বুক টান করে দাঁড়ানো দৃশ্যটির কাঠামো তৈরি করার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা তৈরি হয়। আবু সাইদের পিতা মকবুল হোসেন পাঁচ আগস্টের পর ৮আগস্ট দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক খোলা চিঠিতে তার সন্তান আবু সাইদকে নিয়ে কোনো ভাস্কর্য না বানানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ওই চিঠিতে মকবুল হোসেন লেখেন, “আমরা জানতে পেরেছি, কিছু লোক শহীদ আবু সাঈদের ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। আবু সাঈদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আপনারা এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা আপনাদের ভালোবাসাকে সম্মান করি। কিন্তু আমি চাই না আমার ছেলে দুনিয়াতে যেমন কষ্ট পেয়েছে, আখিরাতেও তেমন কষ্ট পাক।”

 

তিনি আরও বলেন “আমরা মুসলমান। যেহেতু ইসলাম ধর্মে সকল মূর্তি বা ভাস্কর্য বা প্রতিকৃতি বানানো নিষিদ্ধ, সেহেতু আপনাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি- দেশের কোনো স্থানে আমার ছেলের মূর্তি বা ভাস্কর্য বা প্রতিকৃতি যেন না বানানো হয়। আমার ছেলের জন্য যদি কিছু করতেই চান, তাহলে জনকল্যাণমুখী এমন কিছু কাজ করুন যার সওয়ার আবু সাঈদ কবরে পাবে।”

জুলাই স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের মুখপাত্র সৈয়ব আহমেদ সিয়াম বলেন, ‘আন্দোলনে একজন হিন্দু মারা গেলে, আমরা কি কখনো তার স্মরণে গরু জবাই করি? বা তার নামে মিলাদ-মাহফিল করি? করি না কারণ এটা তার ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক। তো যেই আবু সাঈদ এবং তার পরিবার স্পষ্টভাবে মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরুদ্ধে, সেখানে আবু সাঈদের নামে মূর্তি বানানো ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক কাজ। আমরা এমন কাজ না করে আবু সাঈদের জন্য সাদকায়ে জারিয়ামূলক কোনো নেক কাজ করার আহবান জানাবো।’

Leave a Reply

scroll to top