ভারতকে ভয়ংকর মাদক ফেন্টানিলের কাঁচামাল সরবরাহকারী বলল তুলসী গ্যাবার্ডের দপ্তর

New-Project-2025-03-26T152625.072.jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে ফেন্টানিল মাদক তৈরির রাসায়নিক সরবরাহে ভারত ও চীনের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে দেশ দুটিকে ‘রাষ্ট্রীয় অভিনেতা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যারা মাদক পাচারকারী চক্রকে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে রাসায়নিক সরবরাহ করে।

যুক্তরাষ্ট্রের মতে, ফেন্টানিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হওয়া সবচেয়ে মারাত্মক মাদক এবং এর কারণে শুধু ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১২ মাসে ৫২ হাজারের বেশি আমেরিকান নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।

সিনথেটিক আফিমজাত মাদক ফেন্টানিলের অবৈধ বাজারে চীনের সঙ্গে ভারতকেও জড়াল যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন (এটিএ) প্রতিবেদনে দেখা গেছে , ভারত ও চীন মাদক উৎপাদনকারী অপরাধী চক্রের কাছে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ফেন্টানিল তৈরির রাসায়নিক সরবরাহ করে। শুধু তাই নয়, এই মাদক তৈরির উপাদান ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে’ সরবরাহ করা হয়।

এই প্রতিবেদন মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক (ডিএনআই) তুলসী গ্যাবার্ডের কার্যালয় থেকে গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিতে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এটিএ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চক্রগুলো (আন্তর্জাতিক অপরাধী সংগঠন) প্রায়শই রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যেমন: তারা চীন ও ভারতের মাধ্যমে মাদক পাচারের জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক ও সরঞ্জাম পায়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অবৈধ ফেন্টানিল তৈরির রাসায়নিক ও পিল তৈরির সরঞ্জামের প্রধান উৎস চীন, এরপরই রয়েছে ভারত।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ফেন্টানিলের মতো মাদক তৈরির রাসায়নিক সরবরাহের অভিযোগে ভারতকে চীনের সমতুল্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যেখানে গত বছরের প্রতিবেদনে মেক্সিকোর চক্রগুলো ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে কম পরিমাণে রাসায়নিক সংগ্রহ করত বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। সেখানে চীনকে প্রধান সরবরাহকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।

এই প্রতিবেদন এমন সময়ে প্রকাশ করা হলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাদক সমস্যা মোকাবিলাকে রাজনৈতিক অগ্রাধিকার দিয়েছেন, যা তাঁর বৈদেশিক নীতিকেও প্রভাবিত করছে। চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমেরিকায় ফেন্টানিলের মহামারি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তাঁর প্রশাসন বিশ্রাম নেবে না।’

গত ১ ফেব্রুয়ারি ফেন্টানিল পাচারের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্প চীনা পণ্যে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এ ছাড়া, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।

এদিকে, ট্রাম্প গত ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়া ‘লিবারেশন ডে’ শুল্কের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তবে, ভারত এই শুল্ক এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ত্বরান্বিত করার জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

Leave a Reply

scroll to top