নানা সময়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের অনেক সমস্যা নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অফিসে দারস্থ হন । তাদের মধ্যে অনেককেই আবার ডিবি কার্যালয়ে ভাত খাইয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
দেশের রাজনৈতিক ব্যাক্তি থেকে শুরু করে বিনোদন জগতের অনেকেরই ভাত খাওয়ানোর কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবি ভাইরালের পর ডিবি কার্যালয়কে ‘ডিবির ভাতের হোটেল’ বলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে মন্তব্য করেছেন।
বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে পুরান ঢাকা থেকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে হারুন নিজে গয়েশ্বরের প্লেটে খাবার তুলে দেন এবং সেটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয় তখন। মূলত এরপরই ‘হারুনের ভাতের হোটেল’ নাম চালু হয়।
ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, ডিবি কার্যালয়ে ‘ভাতের হোটেল’ আর ফিরবে না। হারুন এবং তাঁর ভাতের হোটেলের কারণে ডিবির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছিল। মানুষ এটি নিয়ে হাসি-তামাশা করেছে। নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ডিবির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে হারুন হাস্যরসে পরিণত করেছিলেন। হারুন যে কক্ষটিকে ভাতের হোটেল বানিয়েছিলেন, সেই কক্ষ এখন দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তখন হারুন অর রশীদ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘কেউ হয়তো মনে করতে পারে, ডিবি একটা ভাতের হোটেল, বলতে পারেন। এতে আমাদের ডিবি ডিমোরালাইজড (মনোবল হারানো) হবে না। এটা আমাদের একটি মানবিক সাইড (দিক)।’
‘জাতিকে নিয়ে মশকরা’
গত বছরের জুলাই মাসের শেষের দিকে গণ-অভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে তুলে আনা হয়। আইন অনুযায়ী তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির না করে ডিবি হেফাজতে রাখা হয়।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ জুলাই ‘কথিত আটক’ ছয়জন সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি দিতে ও দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালাতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের শুনানিতে তৎকালীন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, ‘টিভিতে দেখেছি, এই ছয়জন (সমন্বয়ক) কাঁটাচামচ দিয়ে খাচ্ছে।’ একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেন করলেন এগুলো? জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না। যাকে নেন ধরে, একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।’