ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

New-Project-17-2.jpg

শাবিপ্রবিতে ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ শাবিপ্রবি প্রতিনিধি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে অতিরিক্ত (১৭ হাজার টাকা) ভর্তি ফি নির্ধারণ করার অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। আগামী রবিবারের (১৩ এপ্রিল) মধ্যে ভর্তি ফি কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে না নিয়ে আসলে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ঘেরাও করে তালা ঝুলানো এবং ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা

বুধবার (৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভর্তি ফি, ভর্তি প্রক্রিয়া, ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ভর্তির সময়সূচী ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,  সাবজেক্ট নির্বাচন ও ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষার্থীকে স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মূল ট্রান্সক্রিপ্ট (মার্কশিট) সাথে নিয়ে আসতে হবে। ভর্তির জন্য ফি বাবদ ১৭০০০/= টাকা সাথে নিয়ে আসতে হবে। পরীক্ষার্থীর ব্লাড-গ্রুপ এর যথাপোযুক্ত প্রমানপত্র সাথে নিয়ে আসতে হবে। সাবজেক্ট নির্বাচন এর ক্ষেত্রে উপস্থিত পরীক্ষার্থীদের মেধাক্রম (Rank) অনুযায়ী ডাকা হবে।

 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন রবিবারের মধ্যে ভর্তি ফি সহনীয় পর্যায়ে না নিয়ে আসলে রেজিস্ট্রার দপ্তরে তালা ঝুলানোর আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, পূর্বে অতিরিক্ত ভর্তি পরীক্ষা ফি নিয়ে আমরা যখন মানববন্ধন করি তখন প্রশাসন থেকে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয় যে ভর্তি ফি পূর্বের তুলনায় কম নেওয়া হবে। কিন্তু প্রশাসন তাদের কথা রাখেনি। তাই এইবার আমরা আর কোনো আলোচনায় বসতে চাইনা। যদি আগামী রবিবারের মধ্যে ভর্তি ফি কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে না নিয়ে আসা হয় তাহলে আমরা রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ঘেরাও করে তালা ঝুলাবো এবং ফি না কমানো পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এদিকে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অতিরিক্ত ফি’কে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে এর তীব্র বিরোধিতা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ফি কমানোর দাবিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শাবিপ্রবি শাখা। তারা জানায়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম আগামী ১৫ ই এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করে দেখছি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের মাত্রাতিরিক্ত ভর্তি ফি নির্ধারন করা হয়েছে। যা অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর সাধ্যের বাহিরে।শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এই অযৌক্তিক ফি জন্য তীব্র বিরোধিতা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দ্রুত সময়ের ভিতরে এই অযৌক্তিক ফি কমিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের শাবিপ্রবি শাখাও মাত্রাতিরিক্ত ভর্তি ফি নির্ধারনের প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তারা জানায়, আগামী ১৫ এপ্রিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। গত সেশনে গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকাকালীন ভর্তি ফি-র চেয়ে এবছর ভর্তি ফি খুবই নগন্য পরিমাণ কমানো হয়েছে কিন্তু সেটিও গুচ্ছ পদ্ধতির পূর্ববর্তী সময়ের ভর্তি ফি-র চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশি, যা পরিশোধ করা অধিকাংশ শিক্ষার্থীর সাধ্যের বাইরে। গত কয়েক বছরের মাঝে ভর্তি ফি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি করা কোনভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না।

 

মাত্রাতিরিক্ত ভর্তি ফি নির্ধারনের নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি তারেক মনোয়ার এবং শাখা সেক্রেটারী মাসুদ রানা তুহিন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করে দেওয়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্ব। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের অযৌক্তিক ভর্তি ফি উচ্চশিক্ষার পথকে কঠিন করে তুলবে। ইতিপূর্বেও আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরির লক্ষ্যে উপাচার্য মহোদয়ের নিকট ৫২ দফা সংবলিত স্মারকলিপি প্রদান করে ভর্তি ফি সংস্কারের দাবী জানিয়েছি। তাই আমরা দ্রুত সময়ের মাঝে নতুন করে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য ভর্তি ফি নির্ধারনের দাবী জানাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের স্বার্থের জন্য যৌক্তিক আন্দোলন করবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত কথাবার্তা তারা বলে সেটা কাঙ্ক্ষিত না।

তিনি আরও বলেন, ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় একাডেমিক কাউন্সিলের এখতিয়ারাধীন। এটা ব্যাক্তি হিসেবে কেউ বললেই যে কমানো যাবে এমন না। একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা করে কমতেও পারে আবার নাও কমতে পারে। এটা সবার সম্মিলিত সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এখন হুটহাট কিরে কিছু করার সুযোগ নেই। তবে উপাচার্য মহোদয় চাইলে তিনি এ ব্যাপারে ব্যাবস্থা নিতে পারেন। তিনি চাইলে জরুরি ভিত্তিতে একাডেমিক কাউন্সিলের ব্যবস্থা করতে পারেন।

Leave a Reply

scroll to top