মো. সোহেল হাওলাদার পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমির মারা গ্রামের সন্তান। ঢাকায় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। ছুটিতে গ্রামে গেলে মো. জাকির হোসেন নামের এক কৃষকের পরামর্শে বোম্বাই মরিচের চাষ শুরু করেন তিনি।
প্রথম বছরই লাভের মুখ দেখেন সোহেল। সময়টা ছিল ২০১৮ সাল। পরে ২০২২ সালে ঢাকার চাকরি ছেড়ে গ্রামে স্থায়ী হন। নিজেকে যুক্ত করেন বাণিজ্যিকভাবে বোম্বাই মরিচ চাষে। ২০২২ সালে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ২ লাখ টাকা বিক্রি করেছিলেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি লেগে আছেন বোম্বাই মরিচ উৎপাদন কাজে। শত পরিবার যুক্ত হয়ে পড়ছে বোম্বাই মরিচ উৎপাদন কাজে। কম টাকা ব্যয়ে অধিক লাভবান হওয়া যায় বলে বোম্বাই মরিচ চাষির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
২০১১ সাল থেকে জাপানে বোম্বাই মরিচ রফতানি করা হচ্ছে। জাপানে বোম্বাই মরিচ রফতানি করে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে বাংলাদেশ। আগামী বছর মালয়েশিয়াও যুক্ত হবে আমদানিকারক দেশের তালিকায়। বোম্বাই মরিচ বাণিজ্যিক ভাবে দেশে-বিদেশে বিক্রি করে শতকোটি টাকা আয় করছে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তবে চাষিদের দাবি সফলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না তারা। আর কৃষি অফিস বলছে কৃষকদের সব ধরণের সহযোগিতার কথা।
বোম্বাই মরিচ চাষি মো. নূরে আলম হাওলাদার বলেন, এবার ১৫ শতাংশ জমিতে বোম্বাই মরিচ চাষ করছি। আমার খরচ হয়েছে ১ লাখ। এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ। আশা করছি আরও বিক্রি করতে পারব। বর্ষা মৌসুমে একটা বোম্বাই মরিচ ৯ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারি।
মো. ইউনূস হাওলাদার বলেন, কম খরচে বেশি লাভবান হওয়া যায় বোম্বাই মরিচে। তবে বেশি লাভ পাই বর্ষাকালে। তখন দূর দূরান্ত থেকে পাইকাররা আমাদের কাছ থেকে মরিচ ক্রয় করে নিয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসাইন বলেন, আধুনিক কৃষির সঙ্গে নীলগঞ্জের কৃষকরা সরাসরি সম্পৃক্ত। তারা অসময়ে ফসল ফলিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। বিশেষ করে সেডের মাধ্যমে বোম্বাই মরিচ চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে উৎপাদন বেশি হয় এবং দামও বেশি পায় কৃষকরা। ২ শতক জমি থেকে ১ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারে। আমরা সব সময় পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে থাকিব।