বিপিএলের প্রত্যেক আসরেই বিতর্ক থাকবে এ যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। অনিয়ম হয়নি এবারও। বিশাল আয়োজন গত ৩০ ডিসেম্বর ফরচুন বরিশাল ও দুর্বার রাজশাহীর মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় এবারের বিপিএল। কি ছিল না এবারের বিপিএলে। জমকালো আয়োজন, জনপ্রিয় পাকিস্তানি গায়ক রাহাত ফাতেহ আলী খানের সুরের মূর্ছনা, তিন বিভাগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, মাসকাট, জুলাই স্মৃতিকে ধরে রাখার নানা আয়োজন। এমনকি প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূস ও জড়িত ছিলেন এই বিপিএলে। তাহলে কিসের এতো কমতি! কমতি ছিল বিতর্কের সেই কোটাও পূরণ হয়েছে।
এবারের বিপিএলে সন্দেহর তালিকায় রাখা হয়েছে ৪০ ক্রিকেটারকে, কিন্তু কেন? এর উত্তর কিছুটা পাওয়া যায় অস্ট্রেলিয়ান ক্রীড়া সাংবাদিক ও লেখক জ্যারড কিম্বারের থেকে। বলা চলে বিপিএলের বিতর্ক আগুনে অনেকটা ঘি ঢেলেছে জ্যারড।সম্প্রতি তার ইউটিউব চ্যানেল ‘গুড এরিয়াস উইদ জ্যারড কিম্বার’ এ বিপিএলে ফিক্সিং নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। স্পষ্ট করে যদি বলা হয়, তাহলে বলতে হবে জ্যারপ মূলত সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের বোলিং নিয়ে।
তিনি একাধিক ম্যাচ বিশ্লেষণ করে, তার সঙ্গে বাজির যোগটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে ধীরগতিতে শুরু করা দলগুলো পাওয়ারপ্লের শেষ দিকে এসে রান বাড়িয়ে নিচ্ছে বোলারদের ‘সহায়তায়’। ঠিক সে ম্যাচে, যেখানে সে দলটার পাওয়ারপ্লেতে বড় রানের অনুকূলে বাজির পরিমাণ থাকত বেশি।
এর সাথে রয়েছে ঢাকা-রংপুর ম্যাচে আমির হামজার নো বল বিতর্ক। সাধারণত পেস বোলারদের পপিং ক্রিজ ক্রস করে নো বল করতে দেখা যায়। কারণ লম্বা রানিং এর জন্য এমনটা হতে পারে। তবে স্পিন বোলারদের পপিং ক্রিজ ক্রস করে নো বল করা হরহামেশা চোখে পরে না। কিন্তু এমনটাই দেখা গিয়েছিল আমির হামজা বোলিংয়ের সময়। পপিং ক্রিজের প্রায় ১ ফিট সামনে চলে এসে নো বল করেন। একই ম্যাচে আলাউদ্দিন বাবুর টানা ৩ ওয়াইড। ক্যাচ মিস তো আছে ই।
এই বিষয়টা পরিষ্কার করে উল্লেখ করেছে সাংবাদিক জ্যারড। তিনি বলেন, ’১০ ওভারে কত রান নিতে হবে সেই টার্গেট ও দেয়া থাকে দলগুলোকে, যেমনটা ঢাকার ক্ষেত্রে ছিল ৭৮ রান। প্রথমে ঐ ম্যাচে রংপুরের ১০ ওভারে ৭৮ রান হবে বলে মনে হয়নি। তবে আলাউদ্দিন বাবুর ৪ ওয়াইড ও সাথে চারের মারে সেই কোটা পুরন করে রংপুর।
এর আগে ওশানে থমাসের এক বলে ১৫ রান দেয়ার মতো রেকর্ড ও আছে। যা এই বিতর্কে আরও উসকে দিয়েছে। এ নিয়ে বিসিবি বোর্ড পরিচালক ইফতেখার রহমানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ৪০ জন দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়ের তদন্ত চলছে।
এর মানে, ফিক্সিং কে উড়িয়ে দিচ্ছে না বিসিবি, কাজ করছে তারাও। তবে সেই কাজ ঠিক কতটা কাগজে আর কতটা বাস্তবে হচ্ছে সেটাও দেখতে অনেকটা চিন্তার বিষয়।
বিপিএল এর মান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,’আইপিলের সাথে তুলনা করলে তো হবে না। তবে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজির মানের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বিপিএল ‘।
এখন প্রশ্ন হলো খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক পরিশোধ নিয়ে দলগুলোর গড়িমসি, টিকেট কান্ডে লঙ্কাকাণ্ড ঘটানো, ফিক্সিং বিতর্ক, মানহীন বিদেশি ক্রিকেটার ইত্যাদি কারণে বিশ্ব ক্রিকেটে কি ধরণের ম্যাসেজ যাচ্ছে বিপিএল নিয়ে।