ভারতীয় বিএসএফ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার সেজামুড়া সীমান্তের অধিবাসী বাংলাদেশী যুবক মুরাদুর রহমান মুন্নাকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ।
১০ এপ্রিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতি এই প্রতিবাদ প্রদান করেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় ভারতীয় বিএসএফ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার সেজামুড়া সীমান্তের অধিবাসী বাংলাদেশী যুবক মুরাদুর রহমান মুন্নাকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নিহত মুরাদুর রহমান মুন্নার পরিবার জানিয়েছে যে, সীমান্ত এলাকায় তার কৃষি জমি দেখতে গেলে ভারতীয় বিএসএফ বাহিনীর কয়েকজন তাকে বিনা কারণে ধরে নিয়ে বেদমভাবে পিটিয়ে আহত করে বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে রেখে চলে যায়।
বিজিবির টহলরত সদস্যরা মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে তুলে এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিনা কারণে বিএসএফ তাকে ধরে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় পিটিয়ে হত্যা করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও কূটনৈতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করেছে। এ ঘটনার ৪০ দিন পূর্বে আরও এক বাংলাদেশী যুবককে বিএসএফ এভাবে হত্যা করেছিলো।
তিনি আরও বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায়ই বিনা কারণে অন্যায়ভাবে বাংলাদেশীদের পাখির মত গুলি করে হত্যা করে এবং ধরে নিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার জন্য ভারত বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের বিজিবি’র সাথে ভারতীয় বিএসএফের একাধিক বৈঠকের পরেও সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা ও নির্যাতন কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। ভারতীয় বিএসএফের এমন আগ্রাসী আচরণে বাংলাদেশের জনগণ মারাত্মকভাবে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। বিএসএফের এ ধরনের আচরণই প্রমাণ করে যে, ভারত বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক চায় না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সব সময়ই প্রতিবেশীদের কাছে বন্ধুসুলভ আচরণ কামনা করে। আমরা আশা করব ভারত সরকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করবে এবং বাংলাদেশী যুবক মুরাদুর রহমান মুন্নাকে হত্যা করার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে।
আমরা বাংলাদেশী নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ভারতীয় আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে আমি নিহত মুরাদুর রহমান মুন্নাকে শহীদ হিসেবে কবুল করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি এবং তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে দোয়া করছি যে, আল্লাহ তাদের এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।