নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও অনাহারে থাকতে হচ্ছে না সেখানে বসবাসরত কুকুরদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কুকুরদের খাদ্য সংকট দূর করতে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, নোবিপ্রবি শাখা। আগামী নেতৃত্বের প্রত্যাশী ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আলজকি হোসেনের উদ্যোগে ২৭ মার্চ রাত থেকে ক্যাম্পাস খোলার আগ পর্যন্ত নিয়মিত খাবার সরবরাহের চেষ্টা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থী ও দোকানপাট না থাকায় ক্যাম্পাসে থাকা কুকুরগুলোর খাবারের সংকট দেখা দেয়। সাধারণত, শিক্ষার্থীদের দেওয়া খাবার এবং ক্যাম্পাসের দোকান ও হোটেলের উচ্ছিষ্ট খাবারের ওপর নির্ভর করেই এসব অবলা প্রাণী বেঁচে থাকে। কিন্তু ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সেই সুযোগ কমে যায়। তাই কুকুরদের খাবারের সংকট নিরসনে এগিয়ে আসে ছাত্রদল।
নিয়মিত খাবারের ব্যবস্থা ও সেবার প্রতিশ্রুতি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও অবলা প্রাণীগুলো যেন খাবারের কষ্টে না থাকে, সেজন্য তারা প্রতিদিন খাবার সরবরাহের চেষ্টা করবে। এ প্রসঙ্গে ছাত্রদলের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং এই উদ্যোগের অন্যতম সংগঠক আলজকি হোসেন বলেন—
“আমার মতো এরা (কুকুরগুলো) এখনো ক্যাম্পাসেই পড়ে আছে। ২৭ মার্চ রাত থেকে ক্যাম্পাস খোলার আগ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে থাকা কুকুরদের খাবারের ব্যবস্থা চালু রাখার চেষ্টা করবো।”
কুকুরদের প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি
এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও। অনেকেই মনে করেন, কুকুরগুলোও ক্যাম্পাস পরিবারেরই অংশ, তাই তাদের দেখভাল করা শিক্ষার্থীদের নৈতিক দায়িত্ব। বিশ্ববিদ্যালয়ে একসময় কুকুর নিধনের নানা অভিযোগ উঠলেও সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কুকুরদের প্রতি সচেতনতা ও ভালোবাসা বেড়েছে।
এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন পরিবেশবাদী এবং প্রাণী অধিকার কর্মীরা। ছাত্রদলের এমন দায়িত্বশীল উদ্যোগ অন্য শিক্ষার্থী সংগঠনগুলোকেও উদ্বুদ্ধ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
উদ্যোগের প্রশংসা ও শিক্ষার্থীদের সমর্থন
শিক্ষার্থীরা মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সংগঠন ও প্রশাসন যদি একসঙ্গে এগিয়ে আসে, তাহলে কেবল মানুষ নয়, প্রাণীদের জন্যও একটি সহানুভূতিশীল ক্যাম্পাস তৈরি করা সম্ভব। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এ উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগ পর্যন্ত প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসের কুকুরদের দুর্ভোগ লাঘবের প্রয়াস চালিয়ে যাবে ছাত্রদল। এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মানবিকতা ও দায়িত্ববোধের প্রতিফলন বলে মত দেন অনেকে।