পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক তুলে প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত, যা আগামী ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। স্থানীয় সময় শনিবার (২২ মার্চ) দেশটির ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) থেকে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ভারত আগামী ১ এপ্রিল থেকে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করবে বলে শনিবার দেশটির সরকার জানিয়েছে। দেশীয়ভাবে পেঁয়াজের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার জন্য ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য এবং সরাসরি নিষেধাজ্ঞাসহ প্রায় পাঁচ মাস ধরে রপ্তানি বিধিনিষেধ আরোপের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
এছাড়া পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর থেকে ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক ২০২৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর ছিল। ভারত সরকার বলেছে, এই সিদ্ধান্ত কৃষকদের জন্য ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা বজায় রাখার প্রতি তাদের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে সেটিকেই প্রতিফলিত করে।
এদিকে পৃথক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু বলছে, আগামী ১ এপ্রিল থেকে পেঁয়াজের ওপর ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। দেশটিতে পেঁয়াজের দাম কমার মধ্যে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দ্য হিন্দু বলছে, রপ্তানি শুল্ক ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর ছিল। রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, চলতি অর্থবছরের ১৮ মার্চ পর্যন্ত মোট পেঁয়াজ রপ্তানি ১.১৭ মিলিয়ন টনে পৌঁছেছে। এছাড়া মাসিক পেঁয়াজ রপ্তানির পরিমাণ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ৭২ হাজার টন থেকে বেড়ে এই বছরের জানুয়ারিতে ১ লাখ ৮৫ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পেঁয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির কারণে এই ফসলের প্রধান উৎপাদনকারী রাজ্যগুলোতে পেঁয়াজের দাম হ্রাস পেয়েছে। এশিয়ার বৃহত্তম পাইকারি বাজার মহারাষ্ট্রের লাসালগাঁও এবং পিম্পলগাঁওয়ে গত ২১ মার্চ পেঁয়াজের দাম যথাক্রমে প্রতি কুইন্টালে ১৩৩০ রুপি এবং প্রতি কুইন্টালে ১৩২৫ রুপি ছিল।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মাসে পেঁয়াজের সর্বভারতীয় গড় মূল্য ৩৯ শতাংশ কমেছে এবং খুচরা মূল্য ১০ শতাংশ কমেছে। ভারতের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমান, এ বছর রবি মৌসুমের পেঁয়াজের উৎপাদন হবে ২২.৭ মিলিয়ন টন, যা আগের বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি।
ভারতের মোট উৎপাদনের ৭০-৭৫ শতাংশ রবি মৌসুমের পেঁয়াজ অক্টোবর-নভেম্বরে খরিফ ফসলের আগমন শুরু না হওয়া পর্যন্ত বাজার স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে, “এই মৌসুমে আনুমানিক উচ্চ উৎপাদন আগামী মাসগুলোতে বাজার মূল্য আরও কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
নয়াদিল্লি বলছে, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সরকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষার পাশাপাশি ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পেঁয়াজ রফতানিতে দেশটিতে প্রায় ১০ মাস ধরে যে শুল্ক বসছে, তার শুরু ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। ওই সময় অভ্যন্তরীণ ঘাটতির আশঙ্কায় পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করে ভারত।