পরিবেশ সম্মেলনে পরিবেশেরই ক্ষতি! আমাজনের গাছ কেটে ব্রাজিলে তৈরি হচ্ছে রাস্তা

New-Project-2025-03-13T162623.701.jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক

পৃথিবীর ফুসফুসখ্যাত অ্যামাজন বনের ব্রাজিল অংশে গত জানুয়ারিতে গাছ কাটার রেকর্ড হয়েছে। এক বছর আগের তুলনায় বন উজাড় বেড়েছে কয়েক গুণ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ব্রাজিলের সরকারি মহাকাশ সংস্থার উপগ্রহ চিত্রের ভিত্তিতে অ্যামাজনের বন উজাড় নিয়ে এসব তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে।

ব্রাজিলে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০-এর জন্য নতুন সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে আমাজন বনের বিশাল অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগ পরিবেশ সংরক্ষণ, কার্বন নিঃসরণ কমানো ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্যবিরোধী বলে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছে।

আমাজন বনের বিশাল অংশ কার্বন শোষণ ও অনন্য জীববৈচিত্র্যের জন্য সুপরিচিত। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, এই সড়ক তাদের জীবিকা নষ্ট করছে। আর সংরক্ষণবাদীরা বলছেন, এটি বন্যপ্রাণীদের জন্য হুমকিস্বরূপ হবে।

উত্তর ব্রাজিলের আমাজন শহর বেলেমে কপ৩০ আয়োজনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আট মাইল দীর্ঘ, চার লেনবিশিষ্ট এই মহাসড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। সম্মেলনে প্রায় ৫০ হাজার প্রতিনিধি আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। শহরের যানজট কমানোর লক্ষ্যে এই সড়ক তৈরি হলেও এর ফলে কয়েক হাজার একর বন উজাড় হয়ে গেছে।

এমনকি এই সড়কের একটি অংশ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে যাবে, যেখানে প্রায় ৮০০ প্রজাতির উদ্ভিদ ও ছত্রাক রয়েছে। এই সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি প্রায় এক দশক আগে প্যারাআ রাজ্য সরকার অনুমোদন করলেও পরিবেশগত প্রভাবের কারণে এটি বিলম্বিত হয়েছিল। তবে গত জুন মাসে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়।

সরকারের দাবি, সড়কটি পরিবেশবান্ধব উপায়ে তৈরি হচ্ছে। রাজ্যের অবকাঠামো সচিব অ্যাডলার সিলভেইরা জানিয়েছেন, সড়কের পাশে সাইকেল লেন থাকবে এবং বন্যপ্রাণীদের পারাপারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হবে। এছাড়া, এটি সৌরশক্তিচালিত বাতি দিয়ে আলোকিত করা হবে।

২০২১ সালের জানুয়ারির তুলনায় গত মাসে অ্যামাজনে পাঁচগুণ বেশি গাছ কাটা হয়েছে, যা ২০১৫ সাল থেকে বন ধ্বংসের রেকর্ড রাখার পর এক মাসে সর্বোচ্চ। গত জানুয়ারিতে মোট ৪৩০ বর্গকিলোমিটার (১৬৬ বর্গমাইল) বন উজাড় হয়েছে জানিয়ে বলা হচ্ছে, এই আয়তন নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের চেয়ে সাত গুণ বড়।

আমাজনের ব্রাজিল অংশে বন উজাড় ত্বরান্বিত করতে অনুমতি দেওয়ার জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে দুষছেন পরিবেশবাদীরা।

বিবিসি বলছে, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এখন বিশ্বের বড় এক সঙ্কট হিসেবে দেখা দিয়েছে। যদি আমরা এই সঙ্কট মোকাবিলা করতে চাই, তাহলে অ্যামাজনকে রক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

Leave a Reply

scroll to top