পরিবহন সেবার ভোগান্তি নিরসনে নিজ উদ্যোগে ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আইসিই বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান। NSTU Transit নামে ঐ সিস্টেম শিক্ষার্থীদের যাত্রার বিবরণ সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট শিডিউলে বাস বরাদ্দের প্রক্রিয়া ডায়নামিক করবে। ফলে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনুপাতে বাস সরবরাহ করা যাবে এবং যাতায়াত হবে নির্বিঘ্নে।
ওয়েবসাইটটি বানানোর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “গত ৪/৫ বছরে তো বহুবার বাসের সমস্যায় পড়েছি। সর্বশেষ, একদিন ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় বাস কম থাকায় বিশ্বনাথে স্টুডেন্টরা বাস আটকাই রাখছে। পরিবহন থেকে বাস দিলে ওরা বাস ছাড়বে, পকেট গেট এ সেম অবস্থা হয়। এটা তো সমাধানের পথ হতে পারে না। আদিমতম পথ হতে পারে, প্রশাসন কিছু লোক নিয়োগ দিতে পারে থানার সামনে, বিশ্বনাথে। যাতে বুঝতে পারে, বিভিন্ন শিডিউল এ কেমন স্টুডেন্ট থাকবে।ভাবলাম ব্যাপারটা একটু ভিন্নভাবে ডিল করি। আর আমি প্রফেশনাল ডেভেলপারও না। শিখা থেকেই শুরু করলাম।”
মেহেদীর বানানো এই ওয়েসবাইটের মাধ্যমে বিশ্বিবদ্যালয়ের বাস এলোকেশন সিস্টেমকে ডায়নামিক করবে। যেমন, একটা নিদিষ্ট শিডিউল কতটা বাস লাগতে পারে, এটা রিয়েলটাইম এ আপডেট দিবে। আর এটার জন্য প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের থেকে তাদের যাত্রার বিবরণ সংগ্রহ করবে। যেমন, সকাল ৯ টায় মোট কত শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস যাবে, কোন স্টপেজ এ কত শিক্ষার্থী থাকবে ইত্যাদি। এখানে টিকেট কাটতে হবে, বুকিং দিতে হবে। এরকম কিছুই না। শুধুমাত্র একজন শিক্ষার্থী কখন, কোন স্টপেজ থেকে যাত্রা শুরু করবে এই তথ্য দিবে। তারপর ঐ শিডিউল এ যতজন শিক্ষার্থী যাত্রা করবে, তাদের অনুপাতে প্রয়োজনীয় বাস সরবরাহ করা হবে। আপাতত বুকিং, টিকেট, সিট নাম্বার এসবের ঝামেলা নেই।
প্রত্যেক শিক্ষার্থী মাইজদি থেকে ক্যাম্পাস যেতে প্রতি শিডিউল এর ৪৫ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত সিট বুকিং দিতে পারবে এবং ক্যানসেল করতে পারবে। ক্যাম্পাস থেকে মাইজদি যেতে বাস ছাড়ার ১০ মিনিট আগে পর্যন্ত বুকিং দিতে পারবে। ড্যাশবোর্ড থেকে তারা ক্যাম্পাস কিংবা মাইজদি যাওয়ার সময়, স্টপেজ দেখতে পারবে। বাস শিডিউল, পরিবহন পুলের প্রশাসনিক কাঠামো ও ড্রাইভদের তথ্য ও এম্বুলেন্স সার্ভিস পেতে পারবে। এছাড়া বাস নিয়ে যেকোন অভিযোগ ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে পরিবহন পুল এ পাঠাতে পারবে।
পরিবহন সেবা নিয়ে নোবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দিন দিন কেবল বাড়ছেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের কোনো সমাধান না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন তারা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বাস সংকটের কারণে তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। পরিবহন প্রশাসনের নিকট বারবার দাবি জানানোর পরও শিক্ষার্থীদের তুলনায় পরিবহন সেবা এখনো অপ্রতুল রয়েছে। অনেক সময় চালকরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া গতিতে বাস চালান, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি, বাস সংকট, সময়মতো বাস সরবরাহ না করা, ড্রাইভারদের অসদাচরণ ও স্বেচ্ছাচারিতা, অতিরিক্ত গতি প্রভৃতি বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।