২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছভুক্ত প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এবার নোবিপ্রবি কেন্দ্রে প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, “পরীক্ষার্থীরা যেন কোনো ধরনের ভোগান্তির শিকার না হন, সেজন্য পরিবহন, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা ও আবাসনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”
পরীক্ষার্থীদের জন্য বিস্তৃত সুবিধা
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে নোবিপ্রবির পরিবহনপুলের বাস নির্ধারিত রুটে চলবে। চৌমুহনী ও সোনাপুর মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন ও ট্রাফিক বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া, অতিরিক্ত ভাড়া রোধে হোটেল ও যানবাহন মালিকদের ওপর নজরদারি থাকবে।
ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে স্থানীয় কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে পরীক্ষার্থীদের মনোযোগে বিঘ্ন না ঘটে। পাশাপাশি, বিদ্যুৎ বিভ্রাট মোকাবিলায় পল্লীবিদ্যুৎ বিভাগকে আগাম প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। অভিভাবকদের জন্য ক্যাম্পাসে অডিটোরিয়াম ও প্যান্ডেলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তায় বাড়তি নজর
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স ও একটি ভিজিল্যান্স টিম প্রস্তুত থাকবে। পরীক্ষা চলাকালে পুলিশ, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি সহায়ক নিরাপত্তা টিম মাঠে থাকবে। পরীক্ষার সময় সাধারণ মানুষের ক্যাম্পাসে প্রবেশ সাময়িকভাবে সীমিত রাখা হবে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত
মতবিনিময় সভায় উপাচার্য তার সদ্যসমাপ্ত তুরস্ক সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, সেখানে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো: আলানিয়া আলাদিন কেকুবাত, আঙ্কারা ইয়েলদেরেম বায়েজিদ ও নিদে ওমর হলিসদেমির। এসব চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময়, যৌথ গবেষণা, ভাষা কোর্স ও উচ্চশিক্ষায় পারস্পরিক সহযোগিতার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
অস্তিম তেখনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ টিউশন ফি ছাড়ের প্রস্তাব চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে বলে জানান উপাচার্য।
সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা
সভা শেষে উপাচার্য বলেন, “আপনাদের সহযোগিতা ও গঠনমূলক পরামর্শের মাধ্যমেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আরও এগিয়ে যাবে এবং একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠবে।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ, পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. গাজী মো. মহসিন, প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা।