নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নোবিপ্রবি নেতা নির্ঝর আহমেদ গ্রেপ্তার

New-Project-74.jpg

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নোবিপ্রবি নেতা নির্ঝর আহমেদ গ্রেপ্তার

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) আইন অনুষদের ছাত্র ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা নির্ঝর আহমেদকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে ছাত্র-জনতা। বুধবার (১৯ মার্চ) রাতে নোয়াখালী জেলার মাইজদী শহর থেকে তাকে আটক করা হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নির্ঝর দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে সহিংসতা ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং গত জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।

শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, নির্ঝর আহমেদ ক্যাম্পাসে একাধিক সহিংস কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। বিশেষ করে গত বছরের জুলাই আন্দোলনের সময় তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং বিভিন্নভাবে তাদের দমন করার চেষ্টা করেন। আন্দোলন দমনের জন্য ভিন্নমতাবলম্বীদের হুমকি দেওয়া, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

শুধু তাই নয়, নির্ঝর ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষার্থীদের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসে তার নেতৃত্বে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে।

মিথ্যা মৃত্যু সংবাদ প্রচারের অভিযোগ

শুধু সহিংসতার অভিযোগই নয়, নির্ঝরের বিরুদ্ধে রয়েছে আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েক মাস আগে তিনি তার নিজ পিতা-মাতার মিথ্যা মৃত্যু সংবাদ প্রচার করেন, যা ছিল সম্পূর্ণ ভুয়া। এই ঘটনার মাধ্যমে তিনি ক্যাম্পাসে সহানুভূতি অর্জনের চেষ্টা করেন এবং নিজের অপকর্ম আড়াল করতে চান। শিক্ষার্থীদের ভাষায়, “যে ব্যক্তি নিজের পিতামাতাকে জীবিত পেয়ে তাদের মৃত্যু নিয়ে নাটক সাজাতে পারে, সে জাতির জন্য একটি বড় হুমকি।”

বহিষ্কারের পরও অবৈধ তৎপরতা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নির্ঝর আহমেদকে আগেই ডিপার্টমেন্ট থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এরপরও তিনি ক্যাম্পাসে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নামে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে একাধিকবার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া

নির্ঝরের আটকের খবরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। এক শিক্ষার্থী বলেন, “এই ধরনের সন্ত্রাসীদের স্থান ক্যাম্পাসে নেই। প্রশাসনকে অনুরোধ জানাই, যেন ভবিষ্যতে এমন কেউ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতা ছড়াতে না পারে।”

অন্য একজন শিক্ষার্থী বলেন, “এই গ্রেপ্তার আমাদের আন্দোলনের একটি বড় অর্জন। তবে প্রশাসনের উচিত আরও কঠোর হওয়া এবং ক্যাম্পাসে স্থায়ী শান্তি ফিরিয়ে আনা।”

এখন দেখার বিষয়, পুলিশ নির্ঝর আহমেদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

Leave a Reply

scroll to top