বাংলাদেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম।
বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মিডিয়া ব্যাপক অপপ্রচার ও মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকরা ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সত্য তুল ধরুন।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করতে রংপুরের পীরগঞ্জে মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়ার বাবনপুর গ্রামে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়নি। ভারতের মিডিয়া বাংলাদেশ নিয়ে অনেক মিথ্যা প্রচার করছে। একমাত্র সাংবাদিকেরা এটার বিরুদ্ধে কাউন্টার সত্যটা তুলে ধরতে পারেন। আপনারা সত্য ঘটনা প্রকাশ করে ভারতীয় মিডিয়ার এই মিথ্যা প্রচারটাকে বন্ধ করে দিতে পারেন, এর জন্য আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করব।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের সাংবাদিকরা সত্যি ঘটনাটাই বলে এবং আপনারা সত্যি ঘটনা প্রকাশ করেন। তাহলে যারা অপপ্রচার করছে তাদের মুখে চুনকালি পড়বে।
আবু সাঈদ হত্যা মামলা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলায় তিনজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। এই মামলা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা শুনানি শুরু করব। অন্যান্য যে আসামিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের যদি আপনারা (মিডিয়া) আইডেন্টিফাই করতে পারেন এবং আমার পুলিশ আইডেন্টিফাই করতে পারে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কাউকে কোনো অবস্থায় ছাড় দেওয়া হবে না।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেন স্বাভাবিক হচ্ছে না, এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, দেশবাসীকে ধৈর্য্য ধারণের আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের উন্নতির জন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ যা কিছু রয়েছে, সবাই একসঙ্গে কাজ করলে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আমি মিডিয়ার কাছে অনুরোধ করব আপনারা সত্যি ঘটনা প্রকাশ করেন। যদি আমাদের ভেতরে কোনো দুর্নীতি পান আপনারা সেটা প্রকাশ করুন। ব্যক্তিগতভাবে যদি আমারও কোনো দুর্নীতি দেখেন সেটা প্রকাশ করেন। আমাদের একটু সময় দেন। আগের চাইতে একটু তো পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আস্তে আস্তে আরও উন্নতি হবে।
ইসকন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ইসকন নিষিদ্ধের ব্যাপারে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। পরিকল্পনা হলে জানতে পারবেন।
কোনো মামলায় হয়রানিমূলকভাবে কাউকে জড়ানো হলে ভুক্তভোগী অবশ্যই ছাড়া পাবেন উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, আন্দোলন ঘিরে যারা মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন আমরা তাদেরও আইনের আওতায় আনব এবং মিথ্যা মামলায় যেন কাউকে শাস্তি ভোগ করতে না হয় এ ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি। এজন্য পুলিশের পাশাপাশি ডিসিদের সমন্বয়েও কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ সময় পুলিশ নিয়োগসহ সিলেক্টশনে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি থাকে সেটা তুলে ধরতে সাংবাদিকের আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমি কারো জন্যই রিকুয়েস্ট করছি না। আমরা চাচ্ছি একটা ফেরার সিলেকশন হয়ে যাক। আগে বলা হতো পুলিশে নিয়োগ বাণিজ্য, এবার কিন্তু কোনো ধরনের নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এখন পর্যন্ত ওঠেনি। যদি কোনো রকমের বাণিজ্য হয়ে থাকে আপনারা জানান, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসফাকুজ্জান, র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
