দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত, যেখানে প্রায় লাখো মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত এই ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা মাহফুজুর রহমান। নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও বিশ্বের মঙ্গল কামনায় মোনাজাত করা হয়। যেখানে ফিলিস্তিনসহ মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়।
বৃহৎ এ জামাতকে কেন্দ্র করে প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। সিসিটিভি ক্যামেরা, গোয়েন্দা নজরদারি এবং র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠের চারপাশে তৎপর ছিলেন।
ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম, দিনাজপুর পৌর প্রশাসক বিয়াজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন মারুফ, এবং জেলা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতারা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
বিভিন্ন জেলার ধর্মপ্রাণ লাখ লাখ মুসল্লি এই জামাতে অংশ নিতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ ময়দান ইতোমধ্যেই বড় ঈদের ময়দান ও জামাত হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বড় জামাতে অংশগ্রহণে অনুভূতি ছিল অন্যরকম। ঈদজামাতকে কেন্দ্র করে মাঠে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
নামাজ আদায় শেষে মুসল্লি কামাল বলেন, ‘আমি কুড়িগ্রাম থেকে এসেছি। এটাই গোর-এ শহীদ ময়দানে আমার প্রথম ঈদের নামাজ। অনুভূতিটা অনেক সুন্দর। এখানকার আয়োজনসহ সব বিষয় ভালো লেগেছে। আল্লাহর কাছে ফিলিস্তিন ও দেশের জন্য দোয়া চেয়েছি।’
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম বলেন, দিনাজপুর অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী জেলা। এখানকার মানুষ ভদ্র, নম্র ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও রুচিসম্মত। সর্বসাধারণ জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে। আমরা চেষ্টা করেছি যেন সবাই সুষ্ঠুভাবে নামাজ আদায় করতে পারেন। এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন আসেন। তাদের জন্য একটা অনুকূল নামাজের উত্তম পরিবেশ আমরা তৈরি করতে চাই। জেলা প্রশাসনের উদ্দেশ্য সরকারের নীতি নির্ধারণ অনুযায়ী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আইন অনুযায়ী কাজ করে সর্বসাধারণকে আরও একটু এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এখানে সুষ্ঠুভাবে নামাজ আদায় করার জন্য পুলিশ, সাংবাদিক সবাই সহযোগিতা করেছেন।
এর আগে সকাল ৭টা থেকে মাঠে প্রবেশের জন্য গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়। এ সময় সবাইকে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে প্রবেশ করানো হয়। পুরো মাঠটি ছিল সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণাধীন। ছিল ওয়াচ টাওয়ার ও ড্রোন। যার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মাঠটিকে নজরদারিতে রাখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মাঠে র্যাব, পুলিশ, আনসার ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন। এছাড়া প্রতিটি কাতারে সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল।