খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় এবং সংগ্রহ জটিলতা এড়াতে সরকারের কাছে এবার ধান বিক্রি করেননি কৃষকরা।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সরকারিভাবে আমন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ হাজার ২৫৮ টন। সরকারিভাবে গত ১৭ নভেম্বর থেকে ধান কেনা শুরু হয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে ধান সংগ্রহ অভিযান। সরকার গত আমন মৌসুমে প্রতি কেজি ধানের দাম নির্ধারণ করেছিল ৩০ টাকা। কিন্তু ধান পায়নি গুদামগুলো।
এবার তিন টাকা বাড়িয়ে প্রতি কেজি ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৩ টাকা। এবারও ধান পায়নি উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদাম দুটি। সংগ্রহের শেষ দিন পর্যন্ত ফুলবাড়ী উপজেলার খাদ্যগুদামে এক টন ধান সংগ্রহ হয়েছে।
এসময় ৩ হাজার ২৫৮ দশমিক ৩৩০ টন সেদ্ধ চালের ধান ও ৭৯৫ টন আতপ চালের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেদ্ধ ও আতপ চালের ধান সংগ্রহের জন্য ৮৯টি হাসকিং মিল ও ১০টি অটোরাইস মিলের মধ্যে ৪৯টি হাসকিং মিল এবং ১০টি অটোরাইস মিল চুক্তিবদ্ধ হয় খাদ্য বিভাগের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সেদ্ধ ও আতপ চালের ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমন সংগ্রহের সরকারিভাবে ধানের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল, স্থানীয় বাজারে তার চেয়ে বেশি দামে ধান বেচাকেনা হয়েছে। এ ছাড়াও খাদ্য উপজেলা সদরে হওয়ায় ধান পরিবহনে কৃষকের ব্যয় বাড়ে। শ্রম ও সময়ও বেশি লাগে। এজন্য কৃষক বাড়ি থেকে আশপাশের বাজারে বেশি দামে বিক্রি করেছেন। এতে পরিবহন ব্যয়, শ্রম ও সময় লাগছে। এজন্য কৃষক খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করতে আগ্রহী হননি।
ফুলবাড়ী উপজেলার নলপুকুর এলাকার মেসার্স ফাইজুল হাসকিং মিলের স্বত্বাধিকারী মো. ফাইজুল ইসলাম বলেন, বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় প্রতি কেজি চাল উৎপাদনে ৫০ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এরপরও প্রথম দিকে লোকসান দিয়ে কিছু চাল খাদ্য বিভাগে সরবরাহ করছেন মিলাররা। এতে আর্থিকভাবে লোকসান হয়েছে তাদের।
যদিও খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ধান সংগ্রহের লক্ষ্য বরাবরই কিছুটা বেশি নির্ধারণ করা থাকে, যাতে কৃষক বাজার থেকে ন্যূনতম যৌক্তিক মূল্য তুলে নিতে পারেন। আর চাল সরবরাহ করেন মূলত মিলাররা। এজন্য চাল সংগ্রহের লক্ষ্যও বেশি ধরা হয়।