সারাদেশে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিচার ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা । এতে সেশনজটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
ধর্ষণের বিচারের দাবিতে আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া বিভাগ গুলো হল বিভাগগুলো হলো– দর্শন, লোক প্রশাসন, রসায়ন, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান, ভাষা বিজ্ঞান, বাংলা,পদার্থ, পরিসংখ্যান, ভূতত্ত্ব, ইংরেজি,সংগীত, ম্যানেজমেন্ট, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, স্বাস্থ্য অর্থনীতি, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য, পদার্থ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, উদ্ভিদবিজ্ঞান, ভাষাবিজ্ঞান, প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন, ইএসওএল, মুদ্রণ ও প্রকাশনা, পরিসংখ্যান, গণিত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, তথ্য গ্রন্থাগার ও ব্যবস্থাপনা, পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, মার্কেটিং, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।
তবে সেশন জটের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণায় সেশনজটের শঙ্কা নেই।
গত রোববার (৯ মার্চ) বিকেল ৪টায় ঢাবির আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা জানান তিনি।
অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেশনজটের শঙ্কায় পড়েন তাহলে আমরা কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। যেমন, অল্প সময়ে অতিরিক্ত ক্লাস নেয়া, অনলাইন ক্লাস, ছুটির দিনেও ক্লাস এবং সেমিস্টার গ্যাপ কমানো। করোনাকালীন সময়ের মতো করে সেশনজট নিরসনের আশ্বাস দেন ঢাবির উপ-উপাচার্য।
ধর্ষণের প্রতিবাদ এবং ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে গত কয়েকদিন লাগাতার মিছিল, বিক্ষোভ সমাবেশ চলতে থাকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য, অপরাজেয় বাংলা, বটতলা, সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, কার্জন হল এলাকায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশ করতে দেখা যায়।
শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, ধর্ষণের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও। ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে অপরাজেয় বাংলায় আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের নেতারা।
এর আগে শনিবার (৮ মার্চ) মধ্যরাতে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এদিন রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে যোগ দেন। তারা রাত আড়াইটা পর্যন্ত রাজু ভাস্কর্যের সামনের রাস্তায় বসে অবস্থান নেন এবং ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।