ঢাবিতে তিন যুবকের আমরণ অনশন: ড. ইউনূসকে স্থায়ীভাবে চায় বাংলাদেশ?

New-Project-11-8.jpg
ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশের ক্ষমতায় রাখার দাবিতে ‘মার্চ ফর ইউনূস স্যার’ ব্যানারে তিন যুবক আমরণ অনশন শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার রাত থেকে তারা সেখানে অবস্থান নেন এবং পরদিন সকাল থেকে খাবার ও পানীয় বর্জন করেন।

অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন

  1. মো. হাফিজুর রহমান (২৫)
  2. মো. নাসিম রেজা (২৪) এবং
  3. মো. শরীফুল ইসলাম (২৬)

অনশনরত শিক্ষার্থীদের বক্তব্য

তারা জানান, ড. ইউনূসের হাত ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। তাকে আরও পাঁচ বছর দায়িত্বে না রাখলে সেই অগ্রগতি থমকে যাবে। তাদের ভাষায়, “এটাই আমাদের চূড়ান্ত দাবি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে।”

অনশনে অংশগ্রহণকারী এক যুবক বলেন, আমরা ড. ইউনূস স্যারকে আগামী পাঁচ বছর চাই। কারণ তার পাঁচ বছরের মধ্যে রাষ্ট্রের সব সংস্কার শেষ হোক। উনি ছাড়ার সংস্কার সম্ভব না। আমাদের যে রাজনৈতিক দলেগুলো রয়েছে তারা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। তাছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অনেক তাজা প্রাণ হারিয়েছি। এসবের বিচার ড. ইউনূস ছাড়া সম্ভব না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টটেরর বক্তব্য

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. সাইফুদ্দিন বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে না পড়ে, সে বিষয়ে আমরা সজাগ আছি। অনশনকারীদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজনে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে। পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ যেন বিঘ্নিত না হয়, সেদিকেও নজর রাখছি।”

কি ভাবছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে এই ঘটনাকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ এটিকে নাটকীয় ও অপ্রয়োজনীয় বললেও, কেউ কেউ বলছেন এটি মত প্রকাশের অধিকার চর্চারই একটি অংশ।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো: আসিফ (সদস্য, মুহসিন হল ছাত্রদল) জানান , “প্রতিটি পদে দায়িত্ব পালনের একটি নির্ধারিত সময়সীমা থাকা উচিত। কোনো ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠানের নীতিই মুখ্য হওয়া দরকার।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, ড. ইউনুসকে ৫ বছর রাখার পক্ষে গণঅনশনকে অযৌক্তিক মনে করা হচ্ছে। ভোটবিহীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দীর্ঘস্থায়িত্ব গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থতা এবং দুর্নীতির অভিযোগ ছাত্রজনতার নতুন দলের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তাই দ্রুত স্থিতিশীল নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনর্জীবিত করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

 

প্রসঙ্গত, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সংস্কারমূলক উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে মতভেদ রয়েছে। এই অনশন কতদিন চলবে এবং প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে।

Leave a Reply

scroll to top