বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা দেশের মানুষের সমর্থন পেলে এমন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলব, যেখানে পাস করার পর তাঁকে চাকরির অফার দেওয়া হবে। কেউ বেকার থাকবে না।’
আজ বুধবার সকালে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা এ দেশে মেজরিটি-মাইনরিটি মানি না। এ দেশে যারাই জন্মগ্রহণ করেছে, তারাই দেশের গর্বিত নাগরিক। বিশেষ করে মুসলমান ভাইদের বলব, অন্য ধর্মের মানুষকে কষ্ট দেবেন না। যারা এ দেশকে মেজরিটি-মাইনরিটি করে রেখেছিল, তারাই মাইনরিটির জীবনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। বাহাত্তরের পর থেকে এখন পর্যন্ত এমন যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক।’
আমিরে জামায়াত আরও বলেন, ‘আমরা আর গডফাদার-গডমাদারের বাংলাদেশ দেখতে চাই না। মাফিয়াতন্ত্র, ফ্যাসিবাদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না। আমরা বাংলাদেশকে একটা মানবিক বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে চাই।’
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যতে দুর্নীতি ও দুঃশাসনমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুবসমাজকে আরেকবার গর্জন করতে হবে। কেউ কেউ আমাদের এখনো ভয় দেখায়। আরে ভাই, যাঁরা শহীদ হওয়ার জন্য উন্মুখ, তাঁদের ফাঁসির ভয় দেখান। এই ভয় করলে আমাদের নেতাদের ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলতে হতো না। তাঁরা হাসতে হাসতে জীবন দিয়েছেন।’
এ সময় পঞ্চগড় জেলার উদ্দেশে ডা. শফিক বলেন, কৃষিভিত্তিক এলাকা হিসেবে পঞ্চগড়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বেকারের মালা গলায় নিয়ে ঘোরার চেয়ে কৃষিবিদ হওয়া অনেক ভালো। একজন কৃষক এক সেকেন্ডের জন্য বেকার থাকে না। যেসব এলাকা এর আগে বঞ্চিত হয়েছে, আমরা সরকারে গেলে তারা তাদের পাওনা আগে পাবে।’
অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল হালিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের জেলা সভাপতি মীর মোরশেদ তুহিন, জাগপা চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা রতন চন্দ্র রায়।
আরও বক্তব্য রাখেন পঞ্চগড় জেলার নায়েবে আমীর মাওলানা মফিজ উদ্দিন, শহর আমীর মাওলানা জয়নাল আবেদীন, পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন সরকার, ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি জুলফিকার রহমান, বোদা উপজেলা আমীর মাওলানা জাহিদুর রহমান, তেঁতুলিয়া উপজেলা আমীর আবদুল হাকিম, জননেতা শফি উল্লাহ শফি, পঞ্চগড় সদর উপজেলার কাজলদিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফায়েল প্রধান, মজলিসে মোফাছছেরীন পঞ্চগড় জেলা সভাপতি মাওলানা মাজেদুর রহমান, হাড়িভাসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী। মুল স্টেজের পাশে ছিলেন ২০২২ সালে নৌকাডুবিতে নিহত পরিবারের সদস্যরা।