জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর ও অস্থায়ী আবাসনসহ তিন দাবিতে গণ অনশনে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ শিক্ষার্থী। দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচিতে অটল থাকার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তারা।
আজ রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে তাঁরা এই গণ-অনশনে বসেন।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো—
১. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে।
২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে।
৩. যত দিন অবধি আবাসনব্যবস্থা না হয়, তত দিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও অস্থায়ী আবাসনের জন্য যে আন্দোলন করি, তার ফলে মন্ত্রণালয় ঘেরাও করি। সেখানে আমাদের একটা মিটিং হয় উপদেষ্টা, ইউজিসিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। ওখানে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে তারা এটা সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে পারবে, এতে মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির কোনো বাধা নেই।
তারা আরও বলেন, আমরা প্রশাসনকে যৌক্তিক সময় দিয়েছি যেন তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটা ফলাফল দেয়। ওই মিটিংয়ের পর অনেকবার প্রশাসনের সঙ্গে দেখা করেছি, আপডেট চেয়েছি। তারা আমাদের বলেছে, ‘কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, চিঠি দিয়েছি, আমাদের ওপর ভরসা রাখো।’ কিন্তু এই কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ প্রশাসন। তারা এর বাইরে যেহেতু আর কোনো কথা বলছে না, এ জন্য আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। আমাদের দাবি না মানা অবধি অনশন থেকে উঠব না।
মূলত পুরান ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের জন্য একটি মাত্র হল থাকলেও ছাত্রদের জন্য কোন হল নেই। ফলে হল নিয়ে ২০১৬ সালে আন্দোলন করে পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার রোড ব্লক করে দক্ষিণ বঙ্গের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আন্দোলনের তিব্রতার ফলে তৎকালীন সরকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কেরানীগঞ্জে ২০০ একর জমির উপর ২য় ক্যাম্পাস নির্মানের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
কিন্তু প্রায় ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন দেখা যায়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা ২য় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে করার জন্য ১১ নবেম্বর( ২০২৪) সচিবালয়ের সামনে আন্দোলন করলে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের আশ্বাসে তারা সেই আন্দোলন বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তারপর ও তারা কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে না পেয়ে গণ-অনশনে বসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।