কোটায় ৪১ নম্বর পেয়েও সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ সমালোচনার ঝড়

New-Project-25-4.jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক

কোটা নিয়ে এতো কান্ডের পরও বাদ দেয়া হয়নি এ পদ্ধতি। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭০ নম্বর পেয়েও সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়নি সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে জানা যায় বিভিন্ন কোটায় ৪১-৪৬ নম্বর পেয়েও প্রায় আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন সরকারি মেডিকেল কলেজে । এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। ক্ষোভ জানিয়েছে বেশি নম্বর পেয়ে বঞ্চিত হওয়া শিক্ষার্থীরা।

গতকাল রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এরপরই কম নম্বর পেয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসতে থাকে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৫৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট ৫ হাজার ৩৮০টি আসনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার পুত্র,কন্যার জন্য ২৬৯টি এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য ৩৯টি আসন সংরক্ষিত। মুক্তিযোদ্ধা কোটার ২৬৯টি আসনের মধ্যে ১৯৩ জন পাস ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর তুলতে পেরেছেন। মুক্তিযোদ্ধার বাকি আসনগুলো মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হয়েছে।

এদিকে ভর্তি বঞ্চিত হওয়া শিক্ষার্থীরা বলছেন,বিভিন্ন কোটার মারপ্যাচে ৭০ নাম্বার পেয়েও বঞ্চিত হচ্ছেন মেধাবীরা অপর দিকে মাত্র ৪১ নাম্বার পেয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে কোটায়।

শুধু বঞ্চিত শিক্ষার্থীই নয়, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৪১ নম্বর পেয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও। তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরও কোটা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেননি তারা।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় এখনও কীসের কোটা? আজ থেকেই এই শোষণের শেষ হতে হবে। ফুলস্টপ।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার লিখেছেন, ‘৪১ পেয়ে না-কি মেডিকেলে চান্স পেয়েছে কোটার জোরে, অথচ ৭৩ পেয়েও চান্স পায়নি! ছোটরা দাঁড়িয়ে যাও, পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ। গণঅভ্যুত্থানের সূচনা তো কোটা থেকেই।’

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. রুবীনা ইয়াসমিন গণমাধ্যমকে বলেন, কোটার বিষয়টি ভ্যারিফাই করা হবে। কোটার কাগজপত্র আনার জন্য প্রার্থীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ২৩-২৪ জানুয়ারি। একদিন মুক্তিযোদ্ধা কোটা আর আরেকদিন প্রতিবন্ধী কোটা দেখা হবে। কাগজপত্র চেক করে কোটার রেজাল্ট চূড়ান্ত করা হবে।

৪০ দশমিক ৭৫ পেয়ে একজন চান্স পেয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখনও প্রতিবন্ধী একটি কোটা খালি রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের কোটা এখনও অনেকগুলো ফাঁকা আছে। কোটার জন্য তো সিট বরাদ্দ থাকে। যেহেতু কোটার সিট ফাঁকা রয়েছে, তাই ৪০ এ চান্স পাওয়ার কথা। বড় কথা হলো, কোটাধারী কাউকে আমরা এখনও ভর্তি হতে দিচ্ছি না। কাগজপত্র ভ্যারিফাই করবো, তারিখও চূড়ান্ত। সবকিছু দেখে কোটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Leave a Reply

scroll to top