কিশোরগঞ্জে ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির দুই নেতা বহিষ্কার

New-Project-12-9.jpg

কিশোরগঞ্জে ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির দুই নেতা বহিষ্কার

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আশিক খান(২৩) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির দুই নেতাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার (২৪ মার্চ) জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মীর কামরুল হাসানের সই করা এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই দুই নেতা হলেন কটিয়াদী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আশিকুজ্জামান নজরুল ও উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এবং কিশোরগঞ্জ জজ আদালতের এপিপি রিয়াজুল ইসলাম।

আজ মঙ্গলবার বহিষ্কার আদেশ কপি উপজেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমানের কাছে এসে পৌঁছালে পরে তাঁরা গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তাঁদের বহিষ্কার এর কারণ হিসেবে পদে থাকা অবস্থায় সংঘাত সৃষ্টি ও দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়,চাতল বাগহাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষের সূক্রপাত। এই কমিটি গঠন নিয়ে গত দেড় যুগ ধরে একাধিক পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। এই পরিচালনা পর্ষদ গঠন নিয়ে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নুরুজ্জামান চন্দন ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আশিকুজ্জামান নজরুল পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। তাঁরা উভয়ই সভাপতির পদ চান। এ নিয়ে এলাকাবাসী দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। কিছুদিন আগে অ্যাডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেমায়েত হোসেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে তিনজনের নামের প্রস্তাব পাঠান। তিনজনের মধ্যে নুরুজ্জামান চন্দনকে ১ নম্বরে, আলী হায়দার নামের এক ব্যক্তিকে ২ নম্বরে এবং আ. হান্নান সরকার নামের আরেক ব্যক্তিকে ৩ নম্বর রাখা হয়। তবে এতে আশিকুজ্জামান নজরুলের নাম ছিল না। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হন।

 

নামের সিরিয়াল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় দুই ব্যক্তি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার বেলা ২ টার দিকে ঢাকা বোর্ডের একটি দল তদন্ত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে আসে। এই তথ্য উভয় পক্ষ আগে থেকে জানত। এ নিয়ে উভয় পক্ষের কয়েক শ লোক সকাল থেকে কলেজের আশপাশে অবস্থান নেয়। তদন্তের একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দায়ের কোপে ছাত্রদল নেতা আশিক খান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেমায়েত হোসেন গুরুতর আহত হলে দুজনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশিক খান কে মৃত ঘোষণা করেন।

গত রোববার বহিষ্কৃত দুই ব্যক্তিকে প্রধান আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আশিকের মা রিতা বেগম। এতে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় আলী হায়দার ও হান্নান মিয়া নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, মামলা হওয়ার পর অপর আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

ঘটনার পর থেকে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় আশিকুজ্জামান নজরুল ও রিয়াজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তাঁদের রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠজনেরা জানান, কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির মধ্যে দুটি পক্ষ হয়ে কাজ করছে। রাজনৈতিক মাঠেও পক্ষ দুটির বিরোধ রয়েছে। তারা পরস্পরকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে চায়।

Leave a Reply

scroll to top