এবারও ক্যাম্পাসে ঈদ উদযাপন করবে শাবিপ্রবির আবাসিক হলের কিছু শিক্ষার্থী

New-Project-10-12.jpg

এবারও ক্যাম্পাসে ঈদ উদযাপন করবে শাবিপ্রবির আবাসিক হলের কিছু শিক্ষার্থী

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ শাবিপ্রবি প্রতিনিধি

রমজান মাস শেষে দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। টানা ক্লাস, টার্ম টেস্ট ও প্রেজেন্টেশনের ব্যস্ততা শেষে শিক্ষার্থীরা ছুটছে নাড়ির টানে, ফিরছে প্রিয় ঠিকানায়। তবে সবার কপালে সেই সৌভাগ্য জুটছে না। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অনেক শিক্ষার্থীর জন্য এবার ঈদ মানেই ক্যাম্পাসের নিস্তব্ধতা, প্রিয়জনদের সান্নিধ্য থেকে দূরে এক বিচ্ছিন্ন উৎসব।

পরীক্ষার প্রস্তুতির চাপ, আর্থিক সীমাবদ্ধতা এবং সবচেয়ে বড় বাধা নিজ জেলা থেকে সিলেটের দূরত্ব—এসব কারণে অনেক শিক্ষার্থীর ঈদযাত্রা এবার অধরা স্বপ্ন হয়ে থাকছে। দেশের দূরবর্তী জেলা থেকে আসা অনেক শিক্ষার্থী থেকে যাচ্ছেন হলের একাকী কক্ষে। দুরত্ব যেন এসব শিক্ষার্থীর ঈদ আনন্দ কেড়ে নিয়েছে।

এমনই একজন বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগে। সিলেট থেকে বাড়ির দুরত্ব প্রায় সাড়ে পাঁচশত কিলোমিটার। সড়ক ও নদীপথ পেরিয়ে যেখানে যেতে আসতেই দুইদিন পার হয়ে যায়। ঈদের পরেই সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু, অল্প সময়ের রুটিনে যা শেষ হবে। এজন্য ঈদের ছুটির সময়টা সিলেটে থেকে পরীক্ষা শেষে বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

 

একই হলে থাকা স্বপন আহমেদ বলেন, ‘কে না চায় পরিবারের সাথে ঈদ করতে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রথমবারের মতো ক্যাম্পাসে ঈদ পালন করতে যাচ্ছি। পরিচিত মানুষ গুলোর সাথে ঈদগাহে নামাজ পড়া হবে না। খুব মিস করব আমার মা, বোন ও বন্ধুদের; যাদের ছাড়া ঈদ অনেকটাই অসম্পূর্ণ রয়ে যায়।’

 

বাড়িতে না ফেরার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘সিলেট থেকে বাড়ির দুরত্ব সাড়ে চারশত কিলোমিটারের অধিক। দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিতেই সময় লাগে ১২ ঘন্টার মতো। এছাড়া ঈদের সময় দুরপাল্লার যানবাহনে বাড়তি ভাড়া আদায় আর যানজটের ভোগান্তির ভয় তো আছেই। পরীক্ষাও সন্নিকটে সব মিলিয়ে এবারের ঈদে বাড়িতে যাওয়া সম্ভব হলো না।’

 

শাহপরাণ হলের শেখ ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন পূর্ণতা পায়। তবে দক্ষিণবঙ্গ থেকে আগতরা চাইলেও তা সব সময় সম্ভব হয় না। সিলেট থেকে খুলনা অঞ্চলের দূরত্ব, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের যানজট এসব চিন্তা করলে অনেকের ঈদে বাড়ি ফেরার আনন্দ ফিকে হয়ে যায়। এছাড়া ঈদ আসলেই বাসের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিযোগিতা শুরু হয়, যা একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষে বহন করা কঠিন। ফলে প্রতিবছর একটি ঈদ সিলেটে পালন করার সিদ্ধান্ত নেন অনেকে।’

শুধু দূরত্বই নয়, আর্থিক অসচ্ছলতাও অনেক শিক্ষার্থীর বাড়ি ফেরা আটকে দিয়েছে। আবাসিক হলগুলোতে থাকা একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কিছুদিন আগেই সেমিস্টার ও ক্রেডিট ফি জমা দিতে হয়েছে। ফলে এখন অর্থসংকটে রয়েছেন। ঈদে বাড়ি ফিরলে অতিরিক্ত খরচ হবে, তাই ক্যাম্পাসেই ঈদ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। এভাবেই দূরত্ব ও নানা বাস্তবতার কারণে ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে যাচ্ছে শাবিপ্রবির অনেক শিক্ষার্থীর।

Leave a Reply

scroll to top