এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর আসে আনন্দ ও উৎসবের বার্তা নিয়ে। এই আনন্দ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে দেশের নানা প্রান্তে থাকা মানুষরা নাড়ির টানে বাড়ি ফেরেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরাও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। ছুটি পেয়ে সবাই পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে গেছেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু নিরাপত্তাকর্মীর জন্য বাড়ি ফেরা সম্ভব হয়নি। শত শত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা যখন বাড়ির পথে, তখন ফাঁকা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন এসব নিরলস নিরাপত্তাকর্মী। ঈদের ছুটিতেও তারা নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করছেন, নিশ্চিত করছেন ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি কার্যকর হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে গ্রামের উদ্দেশে রওনা হন। কয়েক দিনের মধ্যে ক্যাম্পাস প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে। ক্লাসরুম, করিডোর, লাইব্রেরি, ভাস্কর্য চত্বর—সব জায়গায় নেমে আসে নীরবতা।
তবে ক্যাম্পাস পুরোপুরি ফাঁকা হয়ে গেলেও কিছু মানুষ রয়েছেন, যারা দিন-রাত এখানে অতন্দ্র প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে আছেন। অপরিচিত কেউ প্রবেশ করছে কি না, নারী-পুরুষ দলবদ্ধভাবে কোথাও যাচ্ছে কি না—সবকিছুতেই রয়েছে তাদের নজরদারি।
২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশের এক প্রতিবেদকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নিরাপত্তাকর্মী আলীনুর বলেন, “সবাই যখন বাড়ি যায়, তখন আমরা ক্যাম্পাস পাহারা দেই। পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটানোর মন চায় ঠিকই, কিন্তু আমাদের দায়িত্ব আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এই সময়টায় আমরা দায়িত্ব পালন করি।”
নিরাপত্তা শাখার এক কর্মকর্তা জানান, ঈদের সময় ক্যাম্পাসে বিশেষ টহল ব্যবস্থা চালু থাকে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এমনকি রাতের বেলাও বিশেষ নজরদারি চলে।
প্রতিদিনের মতো এই ঈদেও নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাবেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা। উৎসবের আনন্দের আড়ালে তাদের এই নিরলস পরিশ্রমই ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যারা উৎসবের দিনেও দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের এই আত্মত্যাগ অনেকের কাছেই অদৃশ্য থেকে যায়। তবে তাদের নিরলস শ্রমেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল ক্যাম্পাস নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকে।