ঢাকাই সিনেমার অন্যতম আলোচিত এক নাম পরীমণি। নিজের কাজ কিংবা সিনেমার চেয়ে ব্যক্তিগত জীবন এবং নানা মন্তব্যের কারণে বেশি আলোচনায় থাকেন অভিনেত্রী। কখনো বিয়ে, কখনো পোশাক, কখনো জেল-জামিন নিয়ে খবরের পাতায় নাম থেকেই যায় তার। আর নিজেদের প্রচার বাড়াতে গণমাধ্যমগুলোও যেন একটু মসলা মাখিয়েই খবর প্রকাশ করতে পছন্দ করে এই অভিনেত্রীর।
তবে বিগত বছর দুয়েক ধরে এসব লাইম লাইট থেকে কিছুটা দূরেই থাকার চেষ্টা করছেন অভিনেত্রী। ছেলে পূণ্য আর মেয়েকে নিয়েই এখন তার জীবন। তবে যতই গা বাঁচিয়ে চলার চেষ্টার করা হোক না কেন তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ভক্তদের আগ্রহ যেন একটু বেশিই থাকে। আর তাতেই এবার হাপিয়ে উঠেছেন পরী। সবার কাছে অনুরোধ করেছেন তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে টানাটানি না করতে।
ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা ‘মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর’ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির এক দিনের মাথায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন পরীমণি। সেখানে অভিনেত্রীরর জামিনদার হয়েছিলেন তরুণ সংগীতশিল্পী শেখ সাদী।
সেদিন আদালতে শুরু থেকেই পরীর পাশে ছিলেন সাদী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি প্রকাশের পর থেকেই শুরু হয় নানা গুঞ্জন। এও গুঞ্জন ওঠে পরীমণির সঙ্গে প্রেম করছেন এই গায়ক! যদিও এর কোনো সত্যতা মেলেনি। এ ধরণের গুঞ্জন এই প্রথম নয়। এর আগে পরীমণির বান্ধবীর স্বামীর সাথে এব ভিডিও প্রকাশের পরও একই ধরণে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে এই নিয়েই বিস্তর আবেগী এক পোস্ট করেছেন পরীমণি। তিনি লিখেছেন, ‘আজ কোনো এক কারণে নিজেকে নিজের মতো করে অনেকগুলো প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করলো আমার। নিজের সাথে কথোপকথন হলো খুব। নিজেকে আক্রমণাত্মক প্রশ্ন করলাম সবগুলোই। যেমন- ১।পরী,আপনি কর্ম জীবনে কি এমন কাজ করেছেন বলে মনে করেন যার জন্য সাধারণ জনগণের আপনাকে নিয়ে এত মাতামাতি? বা পাশাপাশি গনমাধ্যমে আপনাকে নিয়ে এতো সম্প্রচার কেন হয় বলে মনে করেন? ২। আপনার কাজের থেকে লোকে আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলতে কেন পছন্দ করে?
৩। আপনার আগের জেনারেশনের থেকেও যদি আরো একটু আগে চলে যাই,যেমন- শাবানা, ববিতা, কবরী, রজিনা’দের আমলে কি তারা তাদের কাজ নিয়ে যতটা ফোকাসে থাকতেন ততটা কি তাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ফোকাসে থাকতেন?
৪……… ’
তারকাদেরও সাধারণ মানুষের মতো বেঁচে থাকার অধিকার আছে উল্লেখ করে পরীমণি লিখেছেন, ‘ নিজেকে থামিয়ে দিলাম এরকম হাজারো প্রশ্নের থেকে। কারণ, জীবনে কখনো কখনও নিজের কর্ম অবস্থানের থেকে খুব বেশি জরুরী হয়ে পড়ে ওই জীবনটা। প্রত্যেকটা জীবনের অধিকার আছে সুন্দর করে বেঁচে থাকার।’
পরীমণি সকলের কাছে অনুরোধ করে লিখেছেন, ‘আমার প্রথম অনুরোধ, প্লিজ এবার একটু ছেড়ে দেন আমাকে। আমার কাজের বাইরে আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আর টানাটানি কইরেন না আল্লার ওয়াস্তে… ’
নিজের ভবিষেতে ছেলে-মেয়েকে একটা সুন্দর জীবন দিত চান জানিয়ে পরী লিখেছেন, ‘বিশ্বাস করেন, এখানে আমার জীবনটাই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এখন। আমার সাকসেসফুল কেরিয়ার এর থেকেও জরুরী আমার সুস্থ জীবন যাপনের। কারণ আমার বাচ্চাদের আমি একটা সুন্দর সুস্থ জীবন দিতে চাই। আমি আমার বাচ্চাদের মা/ একমাত্র অভিভাবক হয়ে আমি তার সর্বোচ্চ টা দিতে চাই। যেমন করে হয়তো সব মায়েরাই চায়!’
সবশেষে পরী লেখেন, ‘গত তিন/ চারটা মাস আমার জীবনের সবথেকে কঠিন সময় পার করেছি আমি। কেন / কি জন্যে সেটার ডেসক্রিপশনটা দেয়ার প্রয়োজন নেই বলে ধরে নিচ্ছি। আমি নায়িকা, আমি মেয়ে, সব কিছু ছাড়িয়ে আমি মানুষ। আমি এই পৃথিবীর সমস্ত মানুষের কাছে প্রার্থনা করছি – হে মানুষ, হে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণ, তোমরা আমার উপর এবার একটু রহম করো। আগে আমি সুন্দর করে একটু বাঁচি তারপর এমন হাজারো প্রশ্নের উত্তর দেবো……. ’