আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ ৮ মার্চ। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে সমাজ ও পরিবারে নারীর কৃতিত্বকে স্মরণ ও সম্মান জানাতে প্রতিবছর এই দিনটি পালন করা হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি অনেকটাই দৃশ্যমান। ছিনতাই, ডাকাতি, লুটপাট, হামলা ছাড়াও ঘটছে মব সহিংসতার মতো ঘটনা।
কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের প্রতিবাদে এবং ন্যায়সংগত দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছিলেন নারী শ্রমিকেরা। এই শ্রম আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় চালু হয় ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’। গত শতকের সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে দিবসটি জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়।
সামপ্রতিক সময়ে এক গণমাধ্যমকে কয়েকজন নারী তাঁদের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়েছেন। নাসরিন সুলতানা (ছদ্মনাম) দেশের একটি বেসরকারি ব্যাংকের কল সেন্টারে কাজ করেন। রাজধানীর মগবাজার থেকে তেজগাঁওয়ে অফিসে যাতায়াত করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আগস্ট বা সেপ্টেম্বর থেকে আমি লক্ষ্য করলাম, বাসে আগের মতো মেয়েদের জন্য সিট সংরক্ষিত থাকছে না। আগে একটা মহিলা সিটে একজন পুরুষ বসা থাকলেও কোনো মহিলা উঠলে বাসে তিনি আসন ছেড়ে দিতেন। কিংবা চালক বা তার সহকারী ওই ব্যক্তিকে বাধ্য করতেন সিট ছেড়ে দিতে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে এই চিত্র আর দেখা যাচ্ছে না।’
এদিকে গত বুধবার ঢাকার মতিঝিল থেকে উত্তরাগামী মেট্রো রেলে নারীদের কোচে উঠে পড়া পুরুষ যাত্রীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশুদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। সেখানে থাকা এক নারী চিকিৎসক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ‘নারীদের জন্য সংরক্ষিত বগিতে ১০-১২ জন পুরুষ ছিল। বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে তারা এক শিশুসহ নারীদের শ্লীলতাহানি করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দেশে মব ভায়োলেন্স অব্যাহত আছে। নারীদের ওপর আক্রমণের বিষয়টি আগেও ছিল; এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্বল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। জনগণকে রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। তারা যদি না করে আমাদের জনগণের অসহায় হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’
জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালকে ‘আন্তর্জাতিক নারী বর্ষ’ ঘোষণা করে। একই বছর বিশ্ব সংস্থাটি প্রথমবারের মতো ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করে।
নারী ও পুরুষ একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও সমমূল্যায়নের মাধ্যমে সার্থক হবে সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন।