আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল জাবি

New-Project-14-3.jpg

আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল জাবি

জাবি প্রতিনিধি

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান এবং অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান; স্বৈরাচারের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান; হৈ হৈ রৈ রৈ হাসিনা তুই গেলি কই, ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান; খুনি লীগ নিষিদ্ধ কর, করতে হবে করতে হবে; দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা ইত্যাদি শ্লোগান দেন।

এ বিষয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন,”পিলখানায় সেনা অফিসার হত্যা, শাপলায় গণহত্যা, চব্বিশে গণহত্যা চালানোর পরও কারা আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসন করতে চায়? ওয়াকারের কি নিজ সহযোদ্ধাদের জন্য মন কাঁদেনা? এই বাংলার মাটিতে, যেই মাটিতে আবু সাঈদের রক্ত, যেই মাটিতে ওয়াসিমের রক্ত, যেই মাটিতে আলিফ-শ্রাবণের রক্ত লেগে আছে সেই মাটিতে আওয়ামীলীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবেনা। এই লড়াইয়ে আমি বাংলার জমিনের শেষ ব্যক্তি হইতে প্রস্তুত। যেই ফ্যাসিস্ট দল ১৩ সালে শাপলাতে ও ২৪_এ ছাত্র জনতার উপর একাধিক গণ হত্যা চালিয়েছে, একাধিকবার গণহত্যা চালানোর পর এই দলকে নিষিদ্ধ করার জন্য আর কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই। আমরা মনে করি ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে বিদায়ের মাধ্যমে এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখান করেছে। “

সমাবেশে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে বোঝা যায় অন্তর্বতীকালীন সরকার জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করেনি। দেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগকে গণহত্যাকারী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “জেনারেল ওয়াকারকে বলতে চাই, হাসিনার গড়ে ওঠা মসনদ আমরা ৩৬ দিনে ভেঙে দিয়েছি যদি আপনি আবার তাদের ফেরানোর চেষ্টা করেন তাহলে আপনাকেও দেশ থেকে বিতাড়িত করতে এক মুহূর্ত দেরি হবে না।”

সমাবেশে অংশ নেয়া এনসিপির সাভার প্রতিনিধি মো. জুলকারনাইন বলেন,” প্রধান উপদেষ্টাকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়ে অতিদ্রুত এই বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। সেইসঙ্গে জেনারেল ওয়াকারের আওয়ামী লীগকে পুর্নপ্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টার প্রতি আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। তাদের বলতে চাই, গায়ে এক ফোঁটা রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগেকে মাটিতে প্রতিষ্ঠিত করতে দেয়া হবে না।”

মিছিলে অংশ নিয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আজ আমাদের চরম দুঃখের দিন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষেধের দাবিতে আজ আমাদেরকে আবার রাস্তায় নামতে হচ্ছে। অথচ ৫ আগস্ট এই বাংলার জনগণ গণভোটের মাধ্যমে রায় দিয়ে দিয়েছিল যে বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগ চলবে না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে দেয়া মানে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা।”

গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ জিতু বলেন,” আপনারা জানেন ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান করেছিলো এদেশের ছাত্র-জনতা, সুতরাং ছাত্র-জনতা ঠিক করবে এদেশে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কিনা। এই গণহত্যাকারী ফ্যাস্টিস দলকে যে বা যারা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে, আমাদের পরবর্তী যুদ্ধ হবে সেই ব্যক্তি কিংবা দলের বিপক্ষে। আমরা জীবন দিয়েছি, দরকার হলে আবারো জীবন দিবো কিন্তু এদেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। আজকের এই কর্মসূচীতে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্যকে ঘৃণ্যভাবে প্রত্যাখান করলাম।”

উল্লেখ্য, গতকাল প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের আওয়ামীলীগকে আপাতত নিষিদ্ধের কথা ভাবছে না সরকার, বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সারাদেশে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের দাবি ওঠে। সে হিসেবে জাবিতে শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।

Leave a Reply

scroll to top