বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর কোতোয়ালি থানার হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৮৪ আইনজীবীর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া বয়স্ক ও মহিলা বিবেচনায় ৯ জনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (৬ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে তারা জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
এর আগে সকালে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন ৯৪ আইনজীবী। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তাদের জামিন শুনানি শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিকেল পাঁচটার পর আদালত আদেশ দেন।
গত বছরের চার আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আদালত প্রাঙ্গণে ১৪৪ জন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের ওপর হামলা, চেম্বার ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে চলতি বছরের ছয় ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়। মামলা বাদি আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী বাবু। আদালত বাদির জবানবন্দি রেকর্ড করে অভিযোগটি কোতোয়ালি থানায় এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দেন।
মামলা দায়েরের পর হাইকোর্ট থেকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন নেন ১১৫ জন আইনজীবী। সোমবার (৭ এপ্রিল) তাদের জামিনের মেয়াদ শেষ হবে।
এদিন তাদের পক্ষে জামিনের আবেদন শুনানি করেন আইনজীবী। অপরদিকে রাষ্ট্র পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক জাকির হোসেন এ আদেশ দেন। জামিন পাওয়া ৯ জনের মধ্যে ৮ জনই মহিলা আইনজীবী।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, ঢাকা মহানগর আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আব্দুল্লাহ আবু, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমান বাদল, মো. সাইদুর রহমান মানিক, মো. মিজানুর রহমান মামুন, আব্দুর রহমান হাওলাদার, গাজী মো. শাহ আলম, আব্দুল বাতেন, মাহবুবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার গোলাম কিবরিয়া জুবায়ের, মো. আনোয়ার শাহাদাৎ শাওন, মো. ফিরোজুর রহমান মন্টু, মো. আসাদুজ্জামান খান রচি ও সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানম। আসামিদের মধ্যে ১১৫ জন আসামি হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিয়েছিলেন, যার মেয়াদ শেষ হবে আগামীকাল ৭ এপ্রিল।
এ সময় ভুক্তভোগী আইনজীবী একটি মামলার শুনানি শেষে করে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আসেন। তখন আসামি আনোয়ার শাহাদাৎ শাওন হেলমেট পরে হত্যার উদ্দেশ্যে তার দিকে গুলি তাক করেন।