মৌসুমী ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেডের আঘাতে বিধ্বস্ত অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি বাড়িঘর-দপ্তর-বাণিজ্যকেন্দ্র। খবর এএফপির।
বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনতে মঙ্গলবার (১১মার্চ) সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেড গত শনিবার স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার আগে পাঁচ দিন ধরে ৪০০ কিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে ব্যপক তাণ্ডব চালায়। শুক্রবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ৬১ বছর বয়সী এক ব্যক্তি সেতুর ওপর দিয়ে ফোর হুইল ড্রাইভ পিকআপ চালিয়ে যাওয়ার সময় নদীতে ভেসে গেলে তার মৃত্যু হয়।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কুইন্সল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মঙ্গলবার সকালেও এক লাখ ১৮ হাজার বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল। বিদ্যুৎবিহীন বাড়িঘরে ইতোমধ্যে সংযোগ পুনঃস্থাপনের কাজ শুরু করেছে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কোম্পানি এনার্জিএক্স।
এক বিবৃতিতে কোম্পানি জানিয়েছে, আগামী শুক্রবারের মধ্যে ৯৫ শতাংশ বাড়িঘরে বিদ্যুৎ পুনঃসংযোগের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
সংস্থাটি আরও বলেছে, আজ আবহাওয়া কাজের জন্য অনুকূল মনে হওয়ায় দুই হাজারের বেশি কর্মী আবার মাঠে নেমেছেন। নেটওয়ার্কের বিচ্ছিন্ন অংশগুলো মূল্যায়ন করার জন্য তারা হেলিকপ্টার পাঠানোর কথাও জানিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্রিসাফুলি বলেছেন, গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেডের আঘাতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কুইন্সল্যান্ডের ইতিহাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে এটিই সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা।
আঞ্চলিক সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব কুইন্সল্যান্ডে ৩ লাখ ১৮ হাজার ৩৮৭টি আবাসিক বাড়ি এবং কারখানা এবং নিউ সাউথ ওয়েলসে প্রায় ১৬ হাজার আবাসিক বাড়ি এবং কারখানা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে মূল ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই মুষলধারে বৃষ্টি, বড় ঢেউ ও ঝড়ো বাতাস শুরু হয়েছে। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছিল ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভূমিধস হতে পারে।
ঝড়ের কবলে পড়ে একটি যানবাহন দুর্ঘটনায় সেনাবাহিনীর ৩৬ জন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া ব্যুরো (বিওএম) জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেড উপকূল থেকে মাত্র ৪০০ কিলোমিটার (২৫০ মাইল) দূরে অবস্থান করছিল এবং ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার (৭৫ মাইল) পর্যন্ত ধ্বংসাত্মক বাতাসের সঙ্গে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। পানিতে তলিয়ে যেতে পারে এমন অঞ্চল থেকে সাধারণ মানুষকে সরে যাওয়ার আহ্বা জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।