১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১ ও ১৯৯০–সহ সব আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ২০২৪–এর ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না। এই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস মুছে যেতে দেবে না জামায়াত।
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে আহত, পঙ্গু ও শহীদ পরিবারের সদস্যসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে আজ সোমবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের আমির এসব কথা বলেন। দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা এই মাহফিলের আয়োজন করে।
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের ওপর জামায়াতের উদ্যোগে প্রকাশিত ‘শহীদ স্মরণিকা’ বইয়ের কথা উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ১০ খণ্ডে ২ হাজার ৫০০ পৃষ্ঠার এই বইয়ে শহীদদের পরিচয়, গণ-অভ্যুত্থানে ভূমিকা, শহীদ হওয়ার ঘটনা এবং স্থান সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস মুছে যেতে দেবে না জামায়াতে ইসলামী। শহীদ স্মরণিকা ঈদের পরপরই প্রত্যেক শহীদ পরিবারে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।
শহীদ, আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারী ব্যক্তিদের জামায়াত ‘জাতীয় সম্পদ’ হিসেবে মূল্যায়ন করে বলে মন্তব্য করেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, যে মা-বাবা সন্তান হারিয়েছেন, যে বোন স্বামী হারিয়েছেন, যে সন্তান পিতা-মাতা হারিয়েছে, তাঁরা গত বছর রমজানে একত্রে সাহ্রি ও ইফতার করেছেন। এ বছর সেই স্মৃতি মনে করে তৃপ্তিতে সাহ্রি ও ইফতার করতে পারেন না। এই বেদনা সহ্য করার নয়। এ সময় তিনি এবারের ঈদ শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের সঙ্গে উদ্যাপনের ঘোষণা দেন।
ইফতার মাহফিলের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, যাঁদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে, তাঁদের নিয়ে এখন পর্যন্ত কারও ভাবনা চোখে পড়েনি। জামায়াতে ইসলামীর আমিরের নির্দেশে প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে ২ লাখ করে টাকা এবং আহতদের খুঁজে খুঁজে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শহীদেরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার যেই স্বপ্ন দেখেছে, সেই স্বপ্নের বীজ জামায়াতে ইসলামী তার প্রতিষ্ঠাকালেই বুনেছে। শহীদদের স্বপ্নপূরণে জামায়াতে ইসলামী ভবিষ্যতেও কাজ করবে।’ তিনি উপস্থিত সবাইকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।