অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে একটি সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে। সরকারিভাবে এ বিষয়ে কোনো নিশ্চিত তথ্য না এলেও বিভিন্ন সূত্র এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মন্তব্যে এই বৈঠকের সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ সোমবার (৯ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ড. ইউনূসের এই সফরকে সরকারি সফর বলা হলেও, অনেকে মনে করছেন কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণই তার সফরের মূল উদ্দেশ্য। যদিও ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা জানিয়েছে, তবে সেই বৈঠক কবে বা কখন হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
এই সফরের মধ্যেই তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সেক্রেটারি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারুফ কামাল খান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমান সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। আমার কাছে এটা সুখবর বলেই মনে হয়। দ্বন্দ্ব যারা চায় তারা মূর্খ, অবিবেচক, স্বার্থান্বেষী কিংবা ক্ষতিকারক বিশেষ উদ্দেশ্যে নিয়োজিত। আমি চাই, জাতীয় স্বার্থে ইউনূস-তারেক মিথস্ক্রিয়া। এই সমঝোতা বাড়ুক, দেশ ও জাতির কল্যাণ হোক।” তার এই স্ট্যাটাস রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ সূত্রগুলো জানিয়েছে যে, ড. ইউনূসের তরফ থেকেই এমন একটি বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সরকারের দিক থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করা হয়নি, যা এই বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে ধোঁয়াশা আরও বাড়াচ্ছে।
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই ধরনের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বিভিন্ন মতামত দিচ্ছেন। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে সাহায্য করতে পারে। আবার কেউ কেউ এই বৈঠককে ঘিরে রাজনৈতিক মেরুকরণের নতুন সম্ভাবনা দেখছেন।
লন্ডনে ড. ইউনূস এবং তারেক রহমানের মধ্যে সম্ভাব্য এই বৈঠক শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় কিনা এবং যদি হয়, তবে এর ফলাফল দেশের রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলে, সেদিকেই এখন সবার দৃষ্টি।
