বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত আমাদের দেশের কৃষক। তার ওপর নানা স্থানে বালাইনাশকের কয়েকটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি ভেজাল পণ্য সরবরাহ করছে। আর এতে মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের।সরকারের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ল্যাব টেস্টেও এসব কোম্পানির পণ্য ভেজাল প্রমাণিত হয়েছে। এমনকি বেসরকারিভাবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ল্যাবে করা টেস্টেও ভেজাল প্রমাণিত হয়েছে এসব বালাইনাশক।
এরপরও মন্ত্রণালয়ের ঢিলেঢালা নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নিয়ে বালাইনাশক কোম্পানিগুলো দেশব্যাপী বিস্তার করেছে প্রতারণার জাল। বিভিন্ন কোম্পানি এসব অনিয়ম এবং অপরাধের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে টেনস এগ্রো, অ্যামিনেন্স কেমিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ার্স ক্রপ সায়েন্স, এগ্রো ইনপুট বাংলাদেশ, ক্লিন এগ্রো ও নিড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ। তাদের বিরুদ্ধে কখনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
যবিপ্রবির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাভেদ হোসাইন খানের নেতৃত্বে এ পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম নুর আলম এবং সেন্টার ফর সফিস্টিকেটেড ইনস্ট্রুমেন্টেশন অ্যান্ড রিসার্চ ল্যাবরেটরির ডেপুটি ডিরেক্টর ড. মো. ওমর ফারুক।
ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার ফল বলছে, এসব বালাইনাশকে যে পরিমাণ কেমিক্যাল থাকার কথা, তার ধারেকাছেও নেই। এমনকি সর্বনিম্ন পর্যায় থেকেও অনেক কম রয়েছে। কোনো কোনো কোম্পানির বালাইনাশকে প্রয়োজনের চেয়ে এক ভাগ থেকে পঞ্চাশ ভাগ পর্যন্ত কম রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিনিধি সরেজমিন চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখেছেন, সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত ২০ জন পেঁয়াজ চাষি তাদের পেঁয়াজ ক্ষেতে মার্শাল এগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ উৎপাদিত য়োকরাল নামক ছত্রাকনাশক স্প্রে করেন। এর ফলে তাদের প্রায় ৩০ বিঘা জমির পেঁয়াজ পচে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
মিমপেক্সের বিরুদ্ধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগও দিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। এতে বলা হয়, মিমপেক্স এগ্রো কেমক্যিাল কোম্পানিসহ একটি চক্র বালাইনাশক আইন ও আমদানি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সিন্ডিকেট করে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।
এ ছাড়া জনস্বার্থে লিগ্যাল এরা নামের একটি প্রতিষ্ঠান মিমপেক্সের ভেজাল পণ্য নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট করে। এটি আমলে নিয়ে আদালত কৃষি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নির্লিপ্ততাকে দায়ী করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।