পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, যশোরের ভবদহ এলাকায় জলাবদ্ধতার স্থায়ী এবং টেকসই সমাধানে কাজ করছে সরকার। তিনি বলেন, এ এলাকায় ২০ হাজার হেক্টর জমির আবাদ হয়, তারমধ্যে এবছর আমরা প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমি ধান চাষের আওতায় আনতে পেরেছি।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল ২০২৫) তারিখে যশোরের ভবদহ ২১ ভেন্ট স্লুইস গেট এলাকার পানি নিষ্কাশন চিত্র পরিদর্শন পরবর্তী ভবদহ মহাবিদ্যালয় মাঠে এক প্রেস ব্রিফিং এ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আমরা ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু করে দিয়েছি।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভবদহ জলবদ্ধতা সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান কিভাবে করা যায় তা নিয়ে এখানকার স্থানীয় সকল পক্ষের সাথে কথা বলে জনগণের মতামত নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের আলোকে আমরা চেষ্টা করবো চিরস্থায়ী সমাধানের পথে অন্ততপক্ষে কাজটা শুরু করে দেয়া।
উপদেষ্টা আরও বলেন, এ বছরের বর্ষায় গেল বছরে বর্ষার মতো যেন দুর্ভোগ না হয় সে জন্য অন্তর্বর্তীকালীন কিছু কাজ আমরা হাতে নিয়েছি। যেমন, আমডাংগা খাল খনন, এটা নিয়ে বলতে পারেন যতটা চওড়া করে খনন করার কথা ছিল ততটা করা হয়নি। বেশি চওড়া করতে গেলে অনেক বেশী সময় লাগতো। তিনি বলেন, হরি, ভদ্রা ও আপারভদ্রা এই ৩ টা নদী খননের কাজ আমরা দ্রুতই শুরু করে দেব, এটা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী করবে। গত বর্ষার মতো পানি যেন আর না জমে সেজন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ নদীগুলোর খননের কাজ শুরু করে দিবে। এ বছর আমরা আমডাঙ্গা খাল খননের কাজটা শুরু করে দেব।
তিনি বলেন, আমরা সকলে এখন সজাগ আছি। কতগুলো আছে প্রাকৃতিক কারণ যেগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। দুর্ভোগ যেন আপনাদের আর না হয় সেজন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে কৃষকদের যাতে বাণিজ্যিক হারে সেচের জন্য বিল দিতে না হয় সে ব্যবস্থাটা করে দিয়েছিল, ফলে ৫ মাস পানির নিচে থাকা মানুষের অনেক সুবিধা হয়েছিল।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা আশা করবো আপনারা আমাদের সাথে থাকবেন। সব সময় এলাকার অবস্থা কি এটা আমাদেরকে জানালে।
আমরা আজকে একসাথে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে সকলে সরেজমিনে দেখা জাতীয় নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে যখন আমরা সবাই মিলে বসবো তখন আমরা যেন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে একটা ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারি, যেন ভবদহ সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান করে দিয়ে যেতে পারি।
উপদেষ্টা বলেন, এখানকার জলবদ্ধতার সমস্যাটা একটা জাতীয় দুর্যোগ। এত বড় একটা জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় সকলকে নিয়ে আগাতে হবে। এখানকার মানুষদের সাথে কথা বলেই সমাধান করতে হবে। এখানকার যারা ভুক্তভোগী তাদের সাথে কথা বলার প্রক্রিয়াটা শুরু করতে হবে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে যে বিষয়টা সমাধান দিবে আমরা সে সমাধানের পথেই আমরা যাবো। কোন একক সমাধানের কথা এখন বলা সম্ভব নয়।
উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা আরও বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতির তদন্ত কিন্তু আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে একটা কমিটি করে দেয়া হয়েছে, সেখানে যে এলাকাতেই প্রকল্প হবে সে এলাকার জেলা প্রশাসকের একজন প্রতিনিধি থাকবে, স্থানীয় জনগণের পক্ষে একজন থাকবে, একজন ছাত্র প্রতিনিধি থাকবে, একজন বাইরের বিশেষজ্ঞ থাকবে। তারা কিন্তু আমাদেরকে প্রতিবেদন দিচ্ছেন। কোথায় কাজের গতি কম,কোথায় কাজের মান কম, সে প্রতিবেদনগুলো আমরা পাচ্ছি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।