কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বালু নিয়ে খেলা করায় চার বছরের শিশুকে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন মো. শাহজাহান নামের এক কলেজ শিক্ষক। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া মঞ্জুর আলী সর্দার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শাহজাহান বুড়িচং উপজেলা সদরের ফজলুর রহমান মেমোরিয়াল কলেজ অব টেকনোলজির শিক্ষক। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ভিডিওতে শাহজাহানকে শিশুটির মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করতে দেখা যায়। এ সময় তিনি পুকুরে ফেলার কথা স্বীকার করেন। শিশুটি বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর মা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, বুড়িচং থানার পূর্বপাড়ার বাসিন্দা নজির আহম্মেদের দুই মেয়ে– চার বছরের মিফতাহুল মাওয়া ও ১০ বছরের গালিবা সুলতানা বালু নিয়ে খেলা করছিল প্রতিবেশী শাহজাহানের বাড়ির সামনে। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে মিফতাহুলকে মারধর করে পুকুরে ফেলে দেন। এ সময় গালিবা চিৎকার করলে শাহজাহান তাকেও মারধর করেন। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এসে পুকুর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটির মা শামছুন নাহার তানিয়া অভিযুক্ত শাহজাহানকে বলছিলেন, ‘আপনার মধ্যে কি মনুষ্যত্ব নাই? আমার বাচ্চাকে এভাবে পানিতে ফেলে দিলেন! একটু বালু ফেলে দিয়েছে বলে বাচ্চাকে পুকুরে ফেলে দেবেন?’ তখন ওই ব্যক্তি পাল্টা বলেন, ‘তোমার বাচ্চা নাকি কার বাচ্চা– এটা আমি দেখব না। আমার কাছে শিশুর চেয়ে বালুর মূল্য বেশি। তোমার বাচ্চা আমার এখানে আসবে কেন?’
শিশুটির মা তানিয়া বলেন, ‘আমার সন্তানকে মাস্টার শাহজাহান হত্যার চেষ্টা করেছেন। আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। ঘটনার সময় যদি আমার বড় মেয়ে উপস্থিত না থাকত, তাহলে বাচ্চাকে হত্যা করা হতো।’
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশের পর আত্মগোপনে চলে যান শাহজাহান। তাঁর মোবাইল পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, শুক্রবার সকালে শিশুর মা বাদী হয়ে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।