সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী শুক্রবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটছে। সেদিন লাখো মানুষ জড়ো করার লক্ষ্য রয়েছে। তবে দলের নাম কিংবা সাংগঠনিক কাঠামো এখনও চূড়ান্ত হয়নি। গতকাল সোমবার রাজধানীর বাংলামটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এ ঘোষণা দেন।
এদিকে নতুন এই দলকে ঘিরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে দলটির শীর্ষ পদে কারা থাকছেন তা নিয়ে চলছে কানাঘোষা। বাংলাদেশের নতুন দল নিয়ে আলোচনায় আছে ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও। মঙ্গলবার এই নিয়ে ‘শুক্রবার বাংলাদেশে সূচনা নয়া দল, হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা ছাত্র নেতৃত্ব এ বার সক্রিয় রাজনীতিতে’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে নির্বাচনের দাবির মাঝেই তৈরি হচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব এ বার সক্রিয় রাজনীতিতে আসতে চলেছেন। আগামী শুক্রবার নতুন দলটির সূচনা হবে। অপর সামাজিক মঞ্চ জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে মিলিত ভাবে এই রাজনৈতিক দল গঠন করছে তারা। কোন পক্ষের কারা কোন সাংগঠনিক পদে থাকবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যে দফায় দফায় আলোচনা চলছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃত্বের।’
আনন্দবাজার বলছে, ‘তবে নতুন দলের নাম কী হবে, কারা কোন দায়িত্বে থাকবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বক্তব্য, “নতুন বাংলাদেশ সম্পর্কে মানুষের যে কল্পনা, বাংলাদেশকে সেই জায়গায় নিয়ে যাওয়া একটা দীর্ঘ লড়াইয়ের বিষয়। সেই লড়াইকে সামনে রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ঐক্যবদ্ধ ভাবে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতো নতুন দলে কারা কোন পদে জায়গা পাবে সে নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমটি। নির্বাচনের জন্য প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের উপ চাপ প্রয়োগ করছে বলে মনে করছে তারা।
সংবাদমাধ্যমটির ভাষ্য, ‘ঘটনাচক্রে বর্তমানে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের দাবিও ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ছ’মাস অতিক্রম হয়ে গিয়েছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার চাইছে, নির্বাচন আয়োজনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলি সেরে ফেলতে। তবে প্রক্রিয়ায় গতি আনার জন্য মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের উপর চাপ বৃদ্ধি করে যাচ্ছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। বিএনপির বক্তব্য, সংস্কার তারাও চায়। তবে সংস্কার করতে গিয়ে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ যেন সরকার গঠন এবং গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না-করা হয়।’