ফিলিস্তিন মুক্তির আহ্বানে নোবিপ্রবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

New-Project-14-2.jpg

ফিলিস্তিন মুক্তির আহ্বানে নোবিপ্রবি থেকে বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) আজ শহীদ মিনারের সম্মুখভাগে এক মহৎ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে পরিণত হয়েছে। ফিলিস্তিনে চলমান গনহত্যা, নিপীড়ন ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একসাথে থামার আহ্বানে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ঐক্যবদ্ধভাবে একটি শক্তিশালী বার্তা তুলে ধরেন।

সমাবেশটি শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণে উদ্ভাসিত হয়েছে – প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষিকা ও শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মচারী। সমাবেশের সময় উপস্থিত জনমানসে ছিল এক গভীর শোক এবং উদ্দীপ্তি, যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের প্রতি সহানুভূতি ও মানবিক আদর্শের প্রগাঢ়তা প্রকাশ পেয়েছে।

সমাবেশে প্রদর্শিত স্লোগান, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডগুলো ছিল অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক ও বার্তাপ্রদ। প্রায়শই সমাবেশকারীরা “Stop Genocide, Save Gaza” ও “Justice for All” সহ নানা স্লোগান উচ্চারণ করেন, যা তাদের দৃঢ় মনোভাব ও মানবাধিকার রক্ষায় অবিচল সংকল্পকে প্রতিফলিত করে। প্ল্যাকার্ডগুলোতে ছিল মানবাধিকার, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের বিভিন্ন বার্তা। “Justice for All” ও “Save Gaza” সহ নানা স্লোগান লিখা ছিল।

সমাবেশের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, ফিলিস্তিনে চলমান অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং নিরীহ জনগণের প্রতি সহানুভূতি ও সংহতির বার্তা ছড়ানো। বক্তারা ব্যাখ্যা করেন যে, ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষদের বিরুদ্ধে যারা অত্যাচার, নিপীড়ন এবং অবিচারের হাত বাড়িয়েছে, তা শুধু স্থানীয় নয় বরং একটি আন্তর্জাতিক মানবিক সংকট হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।

বক্তারা বলেন, “মুসলিম উম্মাহসহ সকল শান্তিপ্রিয় মানুষকে একত্রে এসে এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের এই মানবিক প্রতিবাদের মাধ্যমেই আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায়ের জয় নিশ্চিত করতে পারব।”

সমাবেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ নেতৃত্ব এই সমাবেশের মুখোমুখি উপস্থিত থেকে একটি দৃঢ় বার্তা ছড়িয়ে দেন। তাদের বক্তব্যে জোর দেওয়া হয় যে, শিক্ষকেরা সামাজিক ন্যায় ও মানবাধিকার রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত থাকবেন। পরিচালকদের বক্তব্যে উল্লেখ করা হয় যে, এই প্রতিবাদ ও মানববন্ধনের মাধ্যমে শুধুমাত্র ফিলিস্তিন নয়, বরং বিশ্বের অন্যায় প্রতিরোধের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা প্রতিফলিত হয়।

 

মানববন্ধন শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবে নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও নতুন দিক নির্দেশনার আশাবাদ এনে দিয়েছে। বক্তারা জানান যে, ফিলিস্তিনে চলমান অত্যাচার ও নিপীড়নের ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কর্তব্যবোধের জাগরণ ঘটাতে সক্ষম হওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের স্থানীয় প্রতিবাদ ও মানববন্ধন আন্তর্জাতিক নীতি-প্রণয়ন ও কার্যকর আন্তর্জাতিক চাপ গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে, ইসরাইলের বিরুদ্ধে সংগঠিত এই প্রতিবাদ আন্তর্জাতিক রাজনীতির জটিলতা ও মানবাধিকারের সংকটকে উল্লেখ করে।

 

তারা বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে – সমাজে ন্যায় ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা।” আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা শিক্ষার্থী হিসেবেই সামাজিক ন্যায় ও সত্যের পক্ষে আমাদের কণ্ঠস্বর উঁচু করছি। আমরা চাই, আমাদের প্রতিবাদের মাধ্যমে ঐতিহ্যগত ও আধুনিক মূল্যবোধের এক নতুন অধ্যায় শুরু হোক।”

শিক্ষার্থীদের এই উদ্বেগ ও জাঁকজমক বর্তমান সমাজের বিভিন্ন অসাম্য ও অবিচারের বিরুদ্ধে সচেতনতার বার্তা প্রদান করে, যা আগামী দিনের জন্য একটি শক্তিশালী সামাজিক আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

সমাবেশের শেষে নোবিপ্রবি প্রতিনিধিরা জানান, “এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কেবল আজকের একটি ঘটনা নয়, বরং আগামীর সংগ্রামের সূচনা। আমরা সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের প্রতি চলমান গণহত্যা, অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অবিরাম কাজ করতে।”

 

তাদের এই অঙ্গীকার শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, বরং সমগ্র সমাজে ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে সঠিক নীতি ও মানবিক মূল্যবোধ রক্ষা করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। পরবর্তী সময়ে, নোবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার ও আলোচনার আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ও কর্মীদের মধ্যে মানবাধিকার সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠায় অবিচল অঙ্গীকার প্রদর্শনের পরিকল্পনা করেছে।

Leave a Reply

scroll to top