পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই নৈতিকতা শিখতে হবে শিশু-কিশোরদের

New-Project-2025-01-23T205504.661.jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক

আমরা ছোট বেলা থেকেই শুনে এসেছি কাঁদা মাটি শক্ত হয়ে গেলে তা দিয়ে আর কোনো পাত্র তৈরি করা যায় না। পাত্র তৈরি করতে হলে মাটি নরম থাকতেই করতে হবে। শিক্ষক ও অভিভাবকরা এমন কথা এজন্য বলতেন যেন শিশুরা ছোট বেলায়ই নীতি-নৈতিকতা শিখে, আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠেন। অর্থ্যাৎ সন্তানদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলতে হলে শিশুকাল থেকে গড়তে হবে। এই শিশুরা বড় হয়ে গেলে আর তাদের নতুন করে নীতি-নৈতিকতা শেখানো যায় না।

শিশুরা যখন কিশোর বয়সে পৌঁছায় তখন তাদের দেহ ও মন বিকশিত হয়। তারা তখন নানা স্বপ্ন দেখেন, চোখের সামনে যা দেখেন তা তারা নিজের জীবনে বাস্তবায়নের সংকল্প করেন। ওই সময়টায় কিশোরদের সঠিক পথে পরিচালনা করতে না পারলে এই কিশোররাই হয়ে ওঠতে পারে ভয়ংকর অপরাধী। ঘটাতে পারে বড় বড় অপরাধও, এ কারণে আমাদের শিশু-কিশোরদের সঠিক পথে বা সৎ পথে পরিচালনার জন্য সবার আগে সতর্ক থাকতে হবে আমাদের অভিভাবকদের।

আমরা একটু সতর্ক হলেই সন্তানদের ভালো মানুষ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো। এক্ষেত্রে দু’দিক থেকে প্রচেষ্টা চালানো জরুরি। এক. পরিবার থেকে, দুই. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে। প্রথমত, শিশুরা পরিবার থেকে প্রাথমিক শিক্ষা পেয়ে থাকেন। পরিবারের সিনিয়র সদস্যরা যেভাবে কথা বলেন শিশুরাও ঠিক সেভাবে কথা বলা শেখেন। তারা (বিশেষ করে বাবা মা) যদি আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন, তাহলে শিশুরাও আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা শেখেন। একজন অতিথি বাসায় এলে বাবা-মা ওই অতিথির সঙ্গে যে ধরণের আচরণ ও আপ্যায়ন করান শিশুরা সেটি নজরে রাখেন, তারাও বড় হলে একই আচরণ করেন।

শিশুরা যদি ঘরে তার বাবা-মাকে ধর্ম চর্চা (স্ব স্ব ধর্ম) করতে দেখেন তাহলে ওই ঘরের সন্তানরাও তা অনুসরণ করেন। বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষায় শিশুদের ধর্ম শেখানো খুবই জরুরি। কারণ, আমরা সবাই জানি, কোনো ধর্মই জাতিকে খারাপ কিছু শেখায় না। মানুষকে সৎ কর্ম শেখানোর দর্শন সব ধর্মেই রয়েছে। ফলে অভিভাবকরা শিশুদের সামনে উত্তম আচরণ করতে পারেন, যাতে সন্তানরা এ থেকে ইতিবাচক ধারণা নিতে পারেন। একইভাবে বাসায় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মশিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতেই হবে। এতে যারা ধর্ম শিখছেন না তাদের চাইতে আপনার সন্তান ভালো থাকবেন।

অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শিশুদের জন্য করণীয় রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুরু থেকেই ধর্ম ও নৈতিকতা শেখানোর ক্ষেত্রে কঠোর হতে হবে। এবং শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের উপদেশমূলক বাণী শোনাতে পারেন। নিজেরা শিক্ষার্থীদের সামনে নীতি ও নৈতিকতা মেনে চলতে পারেন। এতেও শিশু শিক্ষার্থী ও কিশোররা পজেটিভ ধারণা নিতে পারবেন। সর্বপরি যেকোনো উপায়ে আমাদের সন্তানদের ধর্ম ও নৈতিকতা শেখাতে হবে।

Leave a Reply

scroll to top