নদী উদ্ধারে কথা বেশি,কাজ কম

New-Project-2025-03-14T112430.635.jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস। রাজধানী ঢাকার প্রাণ ছিল  বুড়িগঙ্গা। এ নদীকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল এ জনপদের নগরায়ণ। সেই নদীতে প্রতিনিয়ত পড়ছে শিল্পকারখানা, ঢাকা ওয়াসা, সিটি করপোরেশন, গৃহস্থালি, হাটবাজার ও নৌযানের বর্জ্য। সাভারের হেমায়েতপুরের চামড়া শিল্পনগরীর বর্জ্য ধলেশ্বরী নদী হয়ে মিশছে বুড়িগঙ্গায়। দুর্গন্ধে নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।

দেশে নদ-নদীর অবৈধ দখল নিয়ে গত কয়েক বছরে অনেক আলোচনা হয়েছে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের উদ্যোগে ৬৪ জেলায় অবৈধ দখলদারের তালিকা করা হয়েছে। সেই তালিকা জেলায় জেলায় টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। তবে নানা তৎপরতার পরও সাফল্য কম। নদী রক্ষায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় ও নির্দেশনা বাস্তবায়নেও নেই অগ্রগতি।

ঢাকা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া তুরাগ নদের অবস্থা  মৃতপ্রায়। শহর আর কলকারখানার রাসায়নিক মিশ্রিত বর্জ্য তুরাগ নদীর পানিকে আরো বেশি দূষিত করছে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য, ‘আমাদের নদনদীগুলো আমাদের ভবিষ্যৎ’। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীকৃত্য নয়, যেন নদীর শেষকৃত্য করা হচ্ছে। দখল-দূষণে দিনে দিনে মরছে নদী। সরকারকে নদনদী বাঁচাতে খুব দ্রুত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে।

 

মানুষের মতো নদীও ভোগ করতে পারবে সাংবিধানিক অধিকার। ২০১৯ সালে ঐতিহাসিক এক রায়ে নদীকে ‘জুরিসটিক পারসন বা লিগ্যাল পারসন’ অর্থাৎ জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। দেশের সব নদীর দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা সরানোর নির্দেশনাও দেন আদালত। পুরো কর্মকাণ্ড সমন্বয়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে নদীর ‘আইনগত অভিভাবক’ ঘোষণা করা হয়।

গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানসহ অন্য কমিশনারদের পদ ফাঁকাই রয়ে গেছে। সাত মাসেরও বেশি সময় পার হলেও এখনো গঠন হয়নি নতুন নদী রক্ষা কমিশন। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংস্থা-২ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবুল ইসলাম অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে চেয়ারম্যানের কিছু কাজ এগিয়ে নিলেও তিনি সার্বক্ষণিক নন।

বাংলাদেশে সরকারি সংস্থাগুলোর নদনদীর তালিকাভুক্তির পদ্ধতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ তুলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের ভাষ্যমতে, সরেজমিন পরিদর্শন এবং তালিকাভুক্তিতে গ্রহণযোগ্য ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণের পরিবর্তে মূলত টেবিলওয়ার্কের ভিত্তিতে এসব তালিকা প্রণয়ন করা হয়। এমনকি সরকারি সংস্থাগুলোরও একটির অন্যটির তালিকার ওপর তেমন একটা আস্থা দেখা যায় না।

Leave a Reply

scroll to top