রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, ”বিশ্বাসের অমর্যাদাকারীদের শাস্তি না হলে সমাজে নেতিবাচক বার্তা যাবে।”
পাঁচ বছর আগে প্রেমিকা আসমা আক্তারকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে প্রেমিক মারুফ হাসান বাঁধনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার(২৭ফেব্রুয়ারি) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক মুহাম্মদ সামছুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, মেয়েটি ছেলেটিকে ভালোবেসে পঞ্চগড় থেকে হাত ধরে পালিয়ে ঢাকায় এসেছিল। কিন্তু ছেলেটি তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। সমাজে এরকম ঘটনার সর্বোচ্চ সাজা না হলে আইন আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাবে।
এদিন কারাগারে আটক আসামি বাধনকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার উপস্থিতিতে ১২ টা ২০ মিনিটের দিকে বিচারক রায় পড়া শুরু করেন।
১টা ৫ মিনিটে রায় পড়া শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়া তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে, ২০১৯ সালের ২৩ আগস্ট তাকে পঞ্চগড় থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, বাধনের সঙ্গে ভুক্তভোগী আসমা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট তারা পঞ্চগড় থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। তারা কোনো আবাসিক হোটেল না পেয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান করেন। এক পর্যায়ে বলাকা ট্রেনের একটি পরিত্যক্ত বগিতে তাকে নিয়ে যান বাধন।
সেখানে আসমাকে ধর্ষণ করেন তিনি। তবে আসমা চিৎকার করলে তার ওড়না দিয়ে গলা পেচিয়ে হত্যা করে বাধন। এরপর বাধন ফের পঞ্চগড়ে ফিরে যায়।
ট্রেনের বগি বুঝে নিতে গিয়ে ওই বছরের ১৯ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে লাশ দেখতে পায় রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। পরে ওই তরুণীর সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগের মধ্যে জন্ম সনদ দেখে তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ।
এ ঘটনায় মেয়েটির চাচা ঢাকার রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ২৩ অগাস্ট পঞ্চগড় থেকে বাঁধনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
পরে এ মামলায় তার বিচার শুরু হয়। ১৪ জনের সাক্ষ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার বাঁধনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেয়া হয়।