কখনোই ধূমপান করেনি এমন মানুষদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে বায়ুদূষণকে একটি উল্লেখজনক কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসারবিষয়ক গবেষণা সংস্থা আইএআরসি এসব তথ্য জানিয়েছে।
আইএআরসির তথ্য অনুসারে, চির-অধূমপায়ীদের ফুসফুসের ক্যানসার এখন বিশ্বব্যাপী ক্যানসারে মৃত্যুর পঞ্চম সর্বোচ্চ কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আইএআরসি বলছে, কখনো ধূমপান না করা ব্যক্তিদের ফুসফুসের ক্যানসার মূলত অ্যাডেনোকার্সিনোমা (ফুসফুস ক্যানসারের একটি ধরন) হিসেবে দেখা দিচ্ছে। ফুসফুস ক্যানসারের চারটি উপধরনের মধ্যে অ্যাডেনোকার্সিনোমা প্রধান।
ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত আইএআরসির এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালে প্রায় ২ লাখ মানুষের অ্যাডেনোকার্সিনোমার সঙ্গে বায়ুদূষণের সংস্পর্শে আসার সম্পৃক্ততা ছিল।
গবেষণা অনুযায়ী, অ্যাডেনোকার্সিনোমার সঙ্গে বায়ুদূষণের সম্পৃক্ততা বেশি পাওয়া গেছে পূর্ব এশিয়ায়, বিশেষ করে চীনে।
ধূমপান যদি ফুসফুস ক্যানসারের প্রধান কারণ না হয়ে থাকে, তবে বায়ুদূষণের মতো অন্য সম্ভাব্য কারণগুলো শনাক্ত করতে আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
বিশ্বজুড়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। ২০২২ সালে বিশ্বে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের ফুসফুস ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে।
ফুসফুস ক্যানসারের চারটি প্রধান উপধরন হলো অ্যাডেনোকার্সিনোমা, স্কুয়ামাওয়াস সেল কার্সিনোমা, স্মল সেল কার্সিনোমা ও লার্জ সেল কার্সিনোমা। আইএআরসি বলছে, অ্যাডেনোকার্সিনোমা নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রধান উপধরন হিসেবে আসছে।
২০২২ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া পুরুষদের ৪৫ দশমিক ৬ শতাংশ এবং নারীদের ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ অ্যাডেনোকার্সিনোমা উপধরনে ভুগছিলেন। ২০২০ সালে পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার ছিল ৩৯ শতাংশ এবং নারীদের ক্ষেত্রে এই হার ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ।
গত ৪০ বছরে বেশির ভাগ দেশে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত পুরুষদের হার কমলেও নারীদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ক্রমাগত বাড়তে দেখা গেছে।
ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নারীদের যেমন স্তনে চাকা বোধ হলেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে, তেমনি ফুসফুস ক্যানসারের লক্ষণগুলো নিয়েও সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
বিশ্বে কখনোই ধূমপান করেননি, এমন মানুষদের ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার শতকরা হার কত, তা জানা যায়নি। শুধু এই প্রবণতা যে বাড়ছে, সে আলামত পাওয়া গেছে। ধূমপান ছাড়াও আর কী কারণে ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে তা জানতে চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।