খুবি উপাচার্যের সাথে খুলনার নাগরিক নেতৃবৃন্দের মতবিনিময়

New-Project-3-8.jpg
খুবি প্রতিনিধি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সম্প্রসারণে জমি অধিগ্রহণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছেন খুলনার নাগরিক নেতৃবৃন্দ। ৮ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলাস্থ সভাকক্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম এর সাথে মতবিনিময়কালে নেতৃবৃন্দ এ আশ্বাস দেন।

সভায় নাগরিক নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকরি গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদনের পাশাপাশি উন্নত কারিকুলার মাধ্যমে শিক্ষাদান করছে। জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জাতির প্রত্যাশাও অনেক।

 

তিনি আরও বলেন, আট হাজারের অধিক শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে প্রয়োজনীয় আবাসন নেই। মাঠ গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত জমিরও সংকট রয়েছে। এসকল সংকট দূরীকরণ ও ভবিষ্যৎ চাহিদার নিরিখে জমি অধিগ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে খুলনার নাগরিক নেতৃবৃন্দের জোরালো ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। এছাড়া থমকে যাওয়া গল্লামারী ব্রীজের কাজ পুনরায় শুরু করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

 

নাগরিক নেতৃবৃন্দ বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে দেশ-বিদেশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। যার ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান অর্জন এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইরা সুনামের সাথে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত রয়েছেন।

 

বক্তারা আরও বলেন, প্রায়ই পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট ও মাঠ গবেষণার জন্য জমি সংকটের বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সম্প্রসারণে জমি অধিগ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট হস্তান্তর করলে জমি সংকট কিছুটা হলেও দূর করা সম্ভব হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী লিনিয়ার পার্কে অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদকের রমরমা আসর নিয়ে এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে এমন পরিবেশ থাকলে শিক্ষার্থীরা সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হতে পারে। তাই এটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করা প্রয়োজন। এসব ক্ষেত্রে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে খুলনার নাগরিক নেতৃবৃন্দ সার্বিক সহযোগিতা করবে। প্রয়োজন হলে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, খুলনার একুশে বইমেলা সরকারিভাবে হলেও প্রাণ পাচ্ছে না। এক্ষেত্রে একুশে বইমেলা যদি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় করা যায়, তাহলে বইমেলাটি আরও আকর্ষণীয় হবে। তাই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনার মাধ্যমে একুশে বইমেলা আয়োজনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ করেন। এতে খুলনার নাগরিক নেতৃবৃন্দ পাশে থাকার আশা প্রকাশ করেন।

এছাড়া নেতৃবৃন্দ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস নাগরিক নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে প্রকাশনার মাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানান। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নে অবদান রাখার সুযোগ করে দিতে নাগরিক নেতৃবৃন্দের সাথে মাঝেমাঝে মতবিনিময় করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। একই সাথে এ বছর প্রথমবারের মতো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে ঈদের জামাত আয়োজন করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

এ সময় খুলনা সিভিল সোসাইটির উদ্যোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণ ও ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য উপাচার্যের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

মতবিনিময় সভায় খুলনা সিভিল সোসাইটির আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট কর আইনজীবী এস এম শাহনওয়াজ আলী, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খুলনা জেলা সম্পাদক এ্যাড. কুদরত-ই-খুদা, খুলনা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. আ ফ ম মহসীন, সদস্য সচিব এ্যাড. বাবুল হাওলাদার, মিজানুর রহমান বাবু, খুলনা সিভিল সোসাইটির সদস্য সচিব মহেন্দ্র নাথ সেন, এস এম মাহাবুবুর রহমান খোকন, শেখ মফিদুল ইসলাম, মুনীর চৌধুরী সোহেল, এম. নাজমুল আজম ডেভিড, ইঞ্জিঃ রুহুল আমি হাওলাদার, সরদার আবু তাহের, শেখ সাইদুর রহমান, মিয়া আরিফ হোসেন, সৈয়দ আলী হাকিম, মোঃ আসিফ ইকবাল, জামাল মোড়ল, মনিরুল ইসলাম বাবুল, নূরুন নাহার হীরা, কামরুল ইসলাম সিপার উপস্থিত থেকে মতামত ব্যক্ত করেন।

Leave a Reply

scroll to top