ইনু অন্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে আজীবনের জন্য চেয়ারম্যান

New-Project-2025-03-06T120757.349.jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টে রেখেছেন স্ত্রী ও ছেলেকেও, অনিয়মের শেষ নেই রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে

আওয়ামী লীগ আমলে ২০১৫ সালে কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়। রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পাওয়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা প্রত্যেকে ২০ লাখ টাকা করে অনুদান দিয়ে ট্রাস্টের সদস্য হয়েছেন। তবে ইনু এ ফান্ডে কোনো টাকা না দিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে আজীবন চেয়ারম্যান পদ  নিয়েছেন। চুক্তিপত্রের তথ্যমতে, হাসানুল হক ইনু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান থাকবেন!

তথ্যমতে, এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত তৎকালীন এমপি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে আলোচনা করতে যান উদ্যোক্তারা। কিন্তু ইনুর কাছে এ বিষয়টি উত্থাপন করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আজীবন চেয়ারম্যান হিসেবে নাম রাখার প্রস্তাব দেন হাসানুল হক ইনু নিজেই। পরে জটিলতা এড়াতে রাজনৈতিক কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করা হয় আওয়ামী সরকারের তথ্যমন্ত্রী ইনুকে।

নিজে চেয়ারম্যান হয়েই ক্ষান্ত হননি তিনি, স্ত্রী আফরোজা হক রিনা ও ছেলে শমিত আশফাকুল হককেও করেছেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। কোনো আর্থিক অনুদান না দিয়েই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক ইনু ও তার পরিবারের সদস্যরা।

হত্যা মামলায় আটক থাকায় হাসানুল হক ইনুর এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগ পেয়েছেন তার বিপিএড পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই। শুধু তাই নয়, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষকতার যোগ্যতা নেই এমন অনেককে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান আলী প্রতিবেদককে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বেশ কিছু অনিয়ম হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় উপাচার্যের খুব বেশি কিছু করার থাকে না। তবু নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার চেষ্টা করছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ গণমাধ্যমকে বলেন, যারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে আসেন তারা নিজেরা আর্থিক অনুদান দিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডে থাকেন। কিন্তু কেউ বিশ্ববিদ্যালয় দখলের চেষ্টা করলে এবং এর সত্যতা পেলে আমরা তদন্তসাপেক্ষে তাকে ট্রাস্টি থেকে সরিয়ে দিতে সরকারের কাছে সুপারিশ করব।

Leave a Reply

scroll to top