৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে নতুন মোড় এসেছে। বিশেষ করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকেই বলতে গেলে নির্বাচনের জন্য তাড়া দিচ্ছে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। প্রায় প্রতিদিনই নানা সমাবেশ-সংবাদ সম্মেলনে সেই কথাই জাহির করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
এদিকে অন্তবর্তী সরকার গঠনের পাশাপাশি দেশের দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কিংবা গঠনমূলক ইস্যুতে এখন পর্যন্ত সরব রয়েছেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়করা। এরই মধ্যে অন্দরমহলে গুঞ্জন উঠেছে জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র-জনতার উদ্যোগে দেশে নতুন একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। সেই জেরেই সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন সরকারের দায়িত্বে থেকে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হলে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। উদ্দেশ্যটা অবশ্যই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের দিকেই ছিল।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ছাত্রদের প্রতিনিধি সরকারে রেখে তাদের নেতৃত্বে রাজনৈতিক দল গঠন করে নির্বাচনে আসলে তা মেনে নেওয়া হবে না। এরপর উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে বলেন, তিনি রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে সরকার থেকে বের হয়ে যাবেন। তার মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন বাকি সমন্বয়করাও।
এরই মধ্যে প্রকাশ হলো নতুন খবর। দেশের জাতীয় গণমাধ্যম দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দল ঘোষণার আগে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকার থেকে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। আর আগামী জুন মাসে পদত্যাগ করতে পারেন সরকারের আরেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
এদিকে আরেক গণমাধ্যম দৈনিক কালবেলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দল ঘোষণা করতে চায় গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। নতুন দল ঘোষণার আগে ২৪ দফার ইশতেহার তৈরিতে কাজ করছেন তারা। এজন্য ১৭ সদস্যের একটি কমিটি কাজ করছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ছাত্র-জনতার নতুন দল প্রথমে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করবে। আর এই কমিটির সদস্যসচিব হতে যাচ্ছেন নাহিদ ইসলাম। ছাত্রদের নতুন দলের গঠনতন্ত্রের কাজ চলমান রয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে প্রথম সারিতে নেতৃত্বে ছিলেন নাহিদ ইসলাম। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের এক দফার ঘোষক। আন্দোলন চলাকালীন নির্যাতনের শিকারও হয়েছিলেন এই উপদেষ্টা। এমনকি তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর বেশ কয়েকবার সমালোচনার শিকারও হয়েছেন তিনি।
